প্রতিবন্ধী কণ্ঠ শিল্পী ইভা রায় হাত বাড়ায়নি ভিক্ষার জন্য

ইভা রায়কে (৩৫)। অভাবী পিতার সংসারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুয়ায় সেখানে শারিরিক প্রতিবন্ধী হয়েও ভিক্ষার জন্য তিনি হাত বাড়ায়নি কারো কাছে। আপন প্রতিভাগুনে প্রতিভাবান কণ্ঠ শিল্পী ইভা রায়ের দ্রুতি ছড়াতে থাকে গ্রাম থেকে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে। স্থানীয় পর্যায়ের যেকোন অনুষ্ঠান ইভাকে ছাড়া এখন জমেই না। পল্লীগীতি, লোক সংগীত ও ভান্ডারি গান পরিবেশন করে ইভা ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। লেখাপড়ার ইচ্ছা থাকলেও অভাবের সংসারে অস্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেই ইভাকে তা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। দিনমজুর পিতার মৃত্যুর পর ১২ সদস্যর পরিবারের হাল ধরতে তার মা ও অন্যান্য বোনেরা অপরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ শুরু করেন। পরিবারের সদস্যদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শারিরিক প্রতিবন্ধী ইভা মানসিক ভাবে অনেকটাই বিচলিত হয়ে পড়েন। নিজের প্রতিভাগুনে বাড়িতে বসে এলাকার ছেলে-মেয়েদের গান ও পড়াশুনার টিউশনির কাজ শুরু করেন। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে যে সামান্য অর্থকড়ি উপার্জন করেন তা দিয়েই সে সংসারের হাল ধরেন। দারিদ্রতার চরম কষাঘাতেও কণ্ঠ শিল্পী ইভা রায়ের নেই কোন ক্লান্তির ছাপ। শুধু কণ্ঠ শিল্পী হিসেবেই তার দক্ষতা থেমে থাকেনি সে একজন গুনবতি হস্তশিল্পীও বটে। স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের উদ্যোগে ইভা রায়কে একটি সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। যা চাহিদার চেয়ে খুবই নঘন্য। মর্ডান যুগের বাদ্য যন্ত্রসহ পারিপার্শ্বিক নানা সমস্যায়  প্রতিভাবান কণ্ঠ শিল্পী ইভা রায় অনেকটাই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এখন শুধু তার প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা। সরকারি বা ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে প্রতিভাবান ইভা রায় দেশের একজন স্বনামধন্য জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী হতে পারেন।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর মতিলাল রায়ের কন্যা ইভা রায়। পাঁচ বছর বয়সে এক ভয়ংঙ্কর টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন সে। অর্থাভাবে তার অভাবী দিনমজুর পিতা চিকিৎসা করাতে না পারায় পঙ্গুত্ব বরন করে আজ প্রতিবন্ধীদের খাতায় নাম লেখাতে হয়েছে ইভাকে।