গৌরনদীতে হাইব্রীড ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

এক সময় ছিলো। কিন্তু এখন আর নেই। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি শুরু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত পানির কারণে ইরি-বোরো চায়ে আধুনিক পদ্ধতি তেমন একটা কাজে আসছে না। তাই আমন চাষাবাদই তাদের প্রধান ভরসা। তবে বরিশালের দু’এক জায়গায় হাইব্রীড ধান চাষ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে গৌরনদী উপজেলার কৃষকরা সফলতা অর্জন করেছেন। এ জন্য এখানে সাধারণ আমনের পাশাপাশি হাইব্রীড ধানের চাষও শুরু হয়েছে।

গত বছর আষাঢ়ের শুরুতে পানির অভাবে অনেকেই তারা জমিতে রোপা আমন চারা তৈরি করতে পারেননি। ফলে আগাম চারা রোপন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আর সেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না এখানকার কৃষকদের। তেমজুরদের কদরও বেড়ে গেছে।

উপজেলার গেরাকুল গ্রামের কৃষক সাহানুর বেপারী জানান, এ মৌসুমে তিনি ১২ বিঘা জমিতে আমন আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে জমি তৈরির কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে ৫ বিঘা জমিতে চারা রোপনও করেছেন। এবছর আষাঢ়ের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের আমন চারা রোপনে সুবিধা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলনও ভালো হবে।

তেমজুর ইসমাইল শরীফ জানান, এবারের বর্ষায় আমন চারা রোপনসহ অন্যান্য কাজও মিলছে। প্রতিদিন গৃহস্থের বাড়িতে একবেলা খেয়ে তিনি আড়াই’শ থেকে তিন’শ টাকা আয় করছেন বলেও উল্লেখ করেন।

গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৭ ইউনিয়নের প্রায় আশি হাজার একর জমিতে রোপা আমন আবাদের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানকার কৃষকেরা ইরি-বোরো মৌসুমে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ধান আবাদ করে এ বছর বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন। তাই কৃষকেরা রোপা আমন মৌসুমেও হাইব্রিড আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন। তিনি আরো জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে হাইব্রিড ধান আবাদের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও ২০ হাজার একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ও ৩০ হাজার একরে স্থানীয় জাতের ধান আবাদের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খরা বা বন্যায় রোপা আমনের কোনো তি না হলে ইরি-বোরো মৌসুমের মতো রোপা-আমনেও বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সাহা জানান, এবারের বর্ষা মৌসুম চাষাবাদের জন্য বেশ উপযুক্ত। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কৃষকরা ফলনের নির্ধারিত ল্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে তিনি জানান।