গৌরনদীতে দুঃস্থ কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে স্থানীয় লোকজন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কর্মসংস্থান প্রকল্পের অধীনে অতি দরিদ্র ১ হাজার ৯’শ জন শ্রমিকের অনুকুলে ৫৪টি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ওইসব প্রকল্পের জন্য ৯১লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ প্রদান করা হয়। গত ১মার্চ থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু করে ১ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ থাকলেও কোন ইউনিয়নেই সঠিক সময় কাজ শুরু করা হয়নি।

স্থানীয় লোকজন, প্রকল্প কমিটিতে যুক্ত একাধিক সদস্য ও নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক প্রকল্প চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতিটি প্রকল্পে অতিদরিদ্র অর্ধেক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে বাকি দলীয় নেতা-কর্মীদের দুঃস্থ শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করে কর্মসংস্থান প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এলাকাবাসি আরো জানান, সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রকল্পগুলোর আওতাধীন কাঁচা রাস্তা মেরামত, মাঠ ভরাট, ইরি-বোরো ব্ল¬কের দু’পাশে মাটি ভরাট কাজ শুরু করা হয়। কোন কোন প্রকল্পে কাগজপত্রে কাজ শুরু দেখানো হলেও নির্ধারিত তারিখের ২৮ দিন পর কাজ শুরু করা হয়েছে।

সরজমিনে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের সমরসিংহ বিষাই মাতুব্বরের বাড়ি হইতে কালাইরভিটা পর্যন্ত সড়ক নির্মান প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রকল্পে ৩০ জন শ্রমিক তালিকাভুক্ত থাকলেও ১৫ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। নলচিড়া ইউনিয়নের ৬টি প্রকল্পের স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ৩ শত শ্রমিকের স্থানে ২১২জন শ্রমিক কাজ করছেন। সরিকল ইউনিয়নের সাহজিরা স্লুইজগেট থেকে সহিদ খানের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মান কাজে ২০জন শ্রমিক তালিকাভুক্ত থাকলেও ১১ জনকে কাজ করতে দেখা যায়।

এ ছাড়াও মাহিলাড়া ইউনিয়নের মাহিলাড়া হাইস্কুলের পুকুর ভরাট করন কাজ পুর্বেই সম্পন্ন করে কর্মসংস্থান প্রকল্পের অধীনে মাহিলাড়া স্কুলের পুকুর ভরাটের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান প্রকল্পে পুনরায় প্রকল্প দেখিয়ে ১০০জন শ্রমিকের অনুকুলে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে সরিকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন মিলন বলেন, এ ইউনিয়নে কোন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে কিনা কিংবা কারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এ বিষয়ে আমাকে কিছুই অবহিত করা হয়নি। ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, মুজাহার ফকির, মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, এ ইউনিয়নে কর্মসংস্থান প্রকল্পের কাগজপত্রেই কেবল প্রকল্প রয়েছে। উপজেলার ৫৪ টি প্রকল্পের অধিকাংশ প্রকল্প ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়।

উপজেলা প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদ মাহবুব খানের কাছে অনিয়ম-দুর্নীতি ও কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।