মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধরা ইউএনও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ সভার মাধ্যমে হামলাকারীকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত অনিদৃষ্টকালের জন্য ক্লাশ বর্জনের ঘোষনা দেয়। এ নিয়ে ওই এলাকায় এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়ায়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী অরুন কুমার, মিরাজ হোসেন ও নিপা আক্তার জানায়, মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে রাজিহার স্কুল থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে রাজিহার বাজারে পৌঁছলে হামলাকারী বিএনপি নেতা শাহিন ফকিরের সমর্থক রব হাওলাদার ওরফে কালাই ও সাবেক ইউপি সদস্য সালাম খান শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাঁধা প্রদান করে। এ সময় তাদের সাথে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে প্রায় চার কিলোমিটার পথ হেঁটে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা সভা করে হামলাকারী বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত ক্লাশ বর্জনের ঘোষনা দেয়। পরবর্তীতে ইউএনও দীপংকর বিশ্বাসের নির্দেশে আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি অশোক কুমার নন্দি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হামলাকারীকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করে।
উল্লেখ্য, আগৈলঝাড়ার রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দত্ত গত সোমবার (১১ জুলাই) নবম শ্রেনীর ক্লাশে ইংরেজী বিষয়ে সাপ্তাহিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। ওই ক্লাশের ছাত্রী শিখর জাহান বৃষ্টি বাড়ি থেকে একটি শীটে লিখে এনে তা জমা দিয়ে ধরা পরায় তাকে ওই শিক্ষক গালমন্দ করেন। স্কুল ছুটির পর বাড়িতে ফিরে ওই ছাত্রী বিষয়টি তার চাচা শাহিন ফকিরকে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য শাহিন ফকির ওইদিন বিকেলে শিক্ষক উত্তম কুমার দত্ত বাড়ি ফেরার পথে কুমারভাঙ্গা নামকস্থানে পৌঁছলে তার পথরোধ করে। একপর্যায়ে অটোরিকসা (ঈজিবাইক) থেকে শাহিন শিক্ষকে টেনে হিচড়ে নামিয়ে বেদম মারধর করে আহত করে। আহত শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রী শিখর জাহান বৃষ্টির পিতা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসম্পাদক ও রাজিহার গ্রামের নাসিম উদ্দিন স্বপন।
ওসি অশোক কুমার নন্দি হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে এখনো থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।