লামায় ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ

সংবাদ প্রকাশের পর ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচীর চট্রগ্রাম আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সরজমিনে তদন্ত করে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এরপর থেকে সংশ্লিষ্টরা অনিয়ম ঢাকা দিতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। গত ১৭ জুলাই ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচীর চট্রগাম আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক লামা শাখা পরিদর্শন করে শিক্ষা কার্যক্রমে অনিয়মের বিষয়ে স্বীকার করে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, “পত্রিকায় যে কারণে সংবাদ পরিবেশন করেছেন সেটি আমরা নজরে এনেছি, এ অনিয়মের বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি ব্র্যাকের ভাবমূর্তি রক্ষার তাগিদে সাংবাদিকদেরকে পত্র-পত্রিকায় এ ব্যাপারে আর লেখা-লেখি না করার  অনুরোধ জানান।

এদিকে, ব্র্যাকের লামা শাখার সংশ্লিষ্টরা এখনো লামা উপজেলার ৬টি স্কুলের শিক্ষার্থীকে ৮টি স্কুলে দেখিয়ে সমাপনী পরীক্ষায় রেজিষ্ট্রেশন (ডিআর) করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় বন্ধ স্কুল দু’টির সাইন বোর্ড সরিয়ে লামা চেয়ারম্যান পাড়া ও রাজবাড়ি গ্রামে ২০০৯ সালে কোর্স সমাপ্ত খালি ঘরে ওইসব সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ১৭জুলাই/১১ তারিখে বৈক্ষম ঝিরি স্কুলের নাম মুছে, চেয়ারম্যান পাড়া ও পুলিশ ক্যাম্প স্কুলের নাম মুছে রাজবাড়ি লেখা হয়। ওই কেন্দ্র দু’টিতে চলমান কাটা পাহাড় ও কুড়ালিয়াটেক ব্র্র্যাক স্কুলের শিক্ষার্থী কয়েকজনকে এনে সদ্যগঠিত তদন্ত টীমকে দেখিয়ে অনিয়ম জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়।

উল্লেখ্য, ব্র্যাক লামা শাখা কর্তৃক ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ১০টি স্কুলের ১৭৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। একইভাবে ২০১১ সালেও লামা শাখার আওতায় ১০টি স্কুল দেখিয়ে ১৭১ জন ছাত্র-ছাত্রীকে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রাথমিক প্রস্ততি সম্পন্ন করেন। অনুসন্ধানে জানাযায়, বাস্তবে এ শাখার আওতায় স্কুল চলছে বর্তমানে ৮টি। এরমধ্যে লামা উপজেলায় ৬টি ও চকরিয়ায় ২টি। বাড়তি দু’টি স্কুল দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট বেতন-ভাতাদি আত্মসাত করছিল।

দেশব্যাপী এনজিওটির সুনাম থাকলেও সম্প্রতি লামা ব্র্যাক (শিক্ষা) শাখা বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি রক্ষার অজুহাতে অনিয়ম ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। প্রসঙ্গত: সম্প্রতি সনদ প্রদানে উৎকোচ আদায়, ছাত্র অভিভাবকদেরকে তুচ্ছজ্ঞান করাসহ লামা ব্র্যাকে শিক্ষা কার্যক্রমে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত মনিটরিং না করায় স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের লাগাতার অনুপুস্থিতির ফলে ইতোমধ্যে ২টি বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ থাকা ২টি বিদ্যালয় চালু দেখিয়ে বিভিন্ন সুবিধা নিতেন সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যাপারে গতকাল বিকেলে ব্র্যাকের লামা ব্যবস্থাপকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।