বরিশালের আমড়া দেশজুরে জনপ্রিয়

বরিশালের আমড়াদেশের দূর-দুরান্ত থেকে বরিশালের বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনের কাছে অত্যন্ত সু-স্বাদু এ আমড়ার চাহিদা এসে থাকে। এ অঞ্চলের মানুষও শখ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা আত্মীয়স্বজকে আমড়া পাঠিয়ে থাকে। বরিশালের আমরা বলা হলেও মূলত এর উৎপাদন হয়ে থাকে পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠী উপজেলায়। তবে কিছু অংশ বরিশালেও উৎপাদিত হয়। এ উপজেলার বলদিয়া,মদরা, ঈদেলকাঠি, কুড়িয়ানা,সোহাগদল ওজলাবাড়ীসহ অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক আমড়ার চাষ হয়। এসব এলাকায় শত শত আমড়ার বাগান ও চাষী রয়েছে। এসব এলাকার মানুষ যুগ যুগ ধরে বানিজ্যিকভাবে আমড়ার চাষ করে থাকে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩শ একর জমিতে আমড়া চাষ হয়। এছাড়াও বরিশাল অঞ্চলের সব’কয়টি উপজেলার প্রায় গ্রামেই আমড়ার চাষ হয়ে থাকে। যার পরিমানও প্রায় ৩শ একর। যা তালিকাভূক্ত করা হয়নি। এ উপজেলার ৯৫টি আমড়া বাগান তালিকাভূক্ত রয়েছে।

কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী ,হেক্টরপ্রতি ২৭ মে.টন আমড়া উৎপাদিত হয় এবং উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার পরিবার আমড়া চাষের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। আমড়া চাষিরা জানান, সাধারনত ৩ থেকে ৪ বছর একটি গাছ ভালভাবে পরিচর্যা করলে গাছে ফলন শুরু করে। মার্চ-এপ্রিল মাসে গাছে মুকুল আসে এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমড়া বাজারজাত করা হয়।

তবে উপজেলার সোহাগদল গ্রামের রহমত বেপারী নামের এক আমরা ব্যবসায়ী  ইতিমধ্যেই তার ৭টি আমড়া বাগান থেকে আড়াই লাখ টাকার আমড়া বিক্রি করেছে। এখানে সাধারনত ৩ পদ্ধতিতে আমড়া বিক্রি হয়ে থাকে। এগুলো ধরন হলো আমড়া গাছে মুকুল এলেই ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ঠিকামূল্যে  আমড়া বাগান ক্রয় করে থাকে। পরবর্তিতে গাছে আমড়া ধরলে বিক্রি হয় শতক হিসেবে। আর আড়ৎদাররা বস্তা ভর্তি করে ঢাকা, সিলেট,চট্টগ্রাম,যশোর,রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এটা সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে বাগান এলাকায় ১টাকা থেকে ১.৫০ পয়সা দরে আমড়া বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে আমড়ার কুড়ি রয়েছে ৪০টাকা থেকে ৮০ টাকা। কোন কোন ক্ষেত্রে তারও বেশি। উপজেলাগুলোর আমড়া চাষিরা জানান, সরকারি পৃষ্টপোষকতা ও ব্যাংক ঋণ পাওয়া গেলে আরো বৃহৎ আকারে আমড়ার চাষ করা সম্ভব। একই সঙ্গে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্তার কারনে এখান থেকে আমড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতে চাষীদের ও ব্যবসায়ীদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

এ ব্যপারে জেলা কৃষি কর্মকর্তা  দেবাংশু কুমার সাহা বলেন বৃষ্টির কারণে গুটি আমড়ার পরিপকস্ফতা ব্যাহত হয়। এ বছর রোগবালাই নেই। ফলনও ভালো হয়েছে।