লামা পৌরসভায় এডিপি ও রাজস্ব তহবিলের অর্থ হরিলুট

বাস্তবায়নে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তা বাতিল করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়রের বিরুদ্ধে খোদ পৌরসভার ৮ কাউন্সিলর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তুলেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। জনসাধারণের পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগ তদন্ত করার জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২০১০-১১ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি)র আওতায় লামা পৌরসভায় সড়ক, বক্সকালভার্ট, রিংওয়েল স্থাপন, মসজিদ ও শিক্ষা এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন খাতে ৩০টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এসকল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। ২০০১০-১১ অর্থ বছরের এডিপি’র তৃতীয় ও ৪র্থ কিস্তির বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প ব্যয় নির্বাহ করার কথা। সে অনুযায়ী লামা পৌরসভার গত ১০/১০/২০১০ ইং তারিখে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং ০২/২০১০-২০১১ মুলে দরপত্র আহবান করা হয়। যার স্মারক নং- লামা-পৌঃ/আইএফটি/ পাঁচ-৭(১-১৬)২০১০-২০১১/২৪৩। দরপত্র আহ্বানের পর কিছুদিন পর পৌর নির্বাচনের কারণে আহবানকৃত দরপত্রের কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে।
লামা পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ আবু তাহের, শ্যামলী বিশ্বাস, মোঃ রফিক, আলী আহমদ, মংহ্লাচিং মার্মা, জাহানারা বেগম, মোঃ শাহ জাহান ও মোঃ কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, বর্তমান পৌর মেয়র আমির হোসেন নির্বাচিত হয়ে বর্তমান পৌর পরিষদ ও জনসাধারণের প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করে টেন্ডারকৃত ৩০টি প্রকল্পের কাজ বাতিল করেন।  পিপিআর বিধি লঙ্গণ করে ডিটিএম এর নামে মেয়র পৌর তহবিল হতে টাকাগুলি উত্তোলন পূর্বক নানা ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকাগুলি আত্মসাত করেছেন। অভিযোগে প্রকাশ, লাইনঝিরি হতে কলিঙ্গাবিল পর্যন্ত সড়কে কালভার্ট নির্মাণের নামে ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেখিয়ে মেসার্স চাহ্লাখইন মার্মার নামে এডিপি তহবিল হতে টাকা উত্তোলন করেন মেয়র আমির হোসেন। একই সড়কে কালভার্ট নির্মাণের নামে উপজেলা শহর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওভারলেফিং এর মাধ্যমে কালভার্ট নির্মাণের জন্য ৫ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে দরপত্র আহবান করে অর্থ ছাড় করা হয়। লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুর সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে ও পাহাড়তলী জামে মসজিদ হইতে মিশন পর্যন্ত রাস্তার ভাঙ্গণ অংশসমূহের দুইপাশে বল্লিপেলাসাইডিং এর মাধ্যমে উন্নয়নের নামে ৯৯ হাজার ৬শত ৮৩ টাকা এডিপির খাতের তহবিল হতে গত অর্থ বছরে মেয়র উত্তোলন করে হরিলুট করা হয়। এ প্রকল্পের কোন অস্তিত্ব নেই বলে স্থানীয় সচেতন লোকজন জানান।
গত ১৭ আগষ্ট পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে সাবেক বিলছড়ি চেরাংগর নির্মাণের নামে ৮৩ হাজার টাকা পৌর তহবিল থেকে উত্তোলনেরও অভিযোগ উঠছে। অপরদিকে, পৌরসভার ২০১১-১২ অর্থ বছরের লাইনঝিরি টোল পয়েন্টের সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা প্রদান না করে ইজারা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই মেয়র সর্বোচ্চ দরদাতার পে অর্ডার অবমুক্ত করে কম দর উদ্বৃতকারী ইজারাপ্রার্থীকে টোল পয়েন্ট কার্যাদেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজের আখের গোছাতে পৌর মেয়র আমির হোসেন ৩০টি প্রকল্পের কাজ বাতিলসহ নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জনসাধারণ ও পৌর কাউন্সিলনগণ জানিয়েছেন।