আগৈলঝাড়ায় ভাসুর কর্তৃক গৃহবধু ধর্ষিত ॥ হাসপাতালে ভর্তি

মুর্মুর্ষ অবস্থায় ধর্ষিতাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মুরিহার গ্রামে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ধর্ষিতার পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ বছর পূর্বে দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের আফজাল বেপারীর পুত্র সহিদুল বেপারীর সাথে মুরিহার গ্রামের মোশারফ সেরনিয়াবাতের কন্যা তানিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে। বিয়ের পর থেকেই সহিদুল ও তার পরিবার যৌতুকের দাবিতে তানিয়াকে শারিরিক নির্যাতন করে আসছিলো। একপর্যায়ে ২০০৮ সনে তানিয়াকে অমানুষিক নির্যাতন করে তার বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়। সেই থেকে তানিয়া তার পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি অসহায় তানিয়া বেগম (২৬) বাদি হয়ে সহিদুলের বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হয়ে সহিদুল এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

সূত্রে আরো জানা গেছে, গত তিনদিন (২০ আগস্ট) পূর্বে সহিদুলের বড়ভাই জিয়াউদ্দিন বেপারী ওরফে জিয়া তার সহযোগীদের নিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদিকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর হুমকি প্রর্দশন করে। সোমবার রাতে তানিয়াদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিকট আত্মীয়দের বাড়িতে যাওয়ায় নির্জন বাড়িতে তানিয়া একাই রাত্রি যাপন করছিলেন। এ সুযোগে ওইদিন (সোমবার) রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ভাসুর জিয়া বেপারী তার ৪/৫ জন মুখোশপরা সহযোগীদের নিয়ে সিঁদ কেটে ঘরে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ভাসুর জিয়ার সহযোগীরা গৃহবধূর (২৬) হাত-পা ও মুখ চেপে ধরলে ভাসুর জিয়া তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষন করে।

আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি অশোক কুমার নন্দি বলেন, খবর পেয়ে ওই রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে ধর্ষিতার সাথে কথা বলেছে। তিনি আরো বলেন, ধর্ষিতার গৃহবধূ পুলিশকে জানিয়েছেন তার ভাসুর জিয়া ও তার মুখোশপড়া এক সহযোগীর সাথে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে একজনের মুখোশ খুলে যায়। মুখোশখুলে গেলে তিনি (ধর্ষিতা) দেখতে পান মুখোশপড়া ব্যক্তিটি হচ্ছে জিয়ার চাচাতো ভাই আজিজ হাওলাদারের পুত্র ছিদ্দিক হাওলাদার। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ধর্ষিতা ডাক চিৎকার শুরু করলে ধর্ষক ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। ধর্ষিতার চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে বিবস্ত্র অবস্থায় ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই ধর্ষিতাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষিতার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।