বয়সের ভাড়ে নুজ্জ হলেও মনে তারুন্যের ছোঁয়া

আব্দুল গনি সিকদার বলেন, ৩০ বছর খেলার জীবনে জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে ৪৮ টি পদক পেয়েছি। এরমধ্যে অধিকাংশই স্বর্ন পদক। কয়ারিয়া ঈদগাহ ম্যাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। সংসারের হাল ধরতে পরবর্তীতে পুলিশ বাহিনীতে চাকুরি নেন। সাড়ে ৬ ফুট লম্বা সুঠাম দেহের অধিকারী গনি সিকদার, ১৯৬৫ সালে রাজশাহীর সারদা পুলিশ প্রশিক্ষন কেন্দ্রে কর্মরত অবস্থায় ভারত পাকিস্তান রায়ট শুরু হলে তিনি পালিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন। ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার টানে পাক হানাদার প্রতিরোধে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। ওই সময় কয়ারিয়া ঈদগাহ হাই স্কুল মাঠে গনি সিকদারের নিজ উদ্যোগে এলাকার যুবকদের নিয়ে প্রশিক্ষন কেন্দ্র খুলে তাদের ডামি রাইফেল (কাঠের রাইফেল) প্রশিক্ষনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তৈরী করা হয়।
আঃ গনি সিকদার আক্ষেপ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক হিসেবে আমি তাদের প্রশিক্ষন দিলেও কোন সরকারই আমাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেননি। এতে আমার দুঃখ নেই, দেশ স্বাধীনের জন্য যুদ্ধ করেছি কিছু পাবার জন্য নয়। তার পরেও এলাকাবাসি ১৯৭২ সালে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে আমাকে সমর্থন দিয়ে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।
স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আঃ লতিফ, ব্যবসায়ী কাওছার হোসেন ও আওয়ামীলীগ নেতা আবু সুফিয়ান জানান, আঃ গনি সিকদার এলাকার সকলের কাছে গনি ভাই নামে পরিচিত। তিনি ছাত্র জীবনে ছিলেন খুবই মেধাবী। খেলোয়ার হিসেবে তার সুখ্যাতি বিভিন্ন স্থানে ছরিয়ে পরছিলো। বয়সের ভারে নুজ্জ হয়ে পড়লেও তিনি এখনো তারুন্যের মনভাব নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সমাজ সংস্কারে সংগঠক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি পত্রিকা ও বিভিন্ন বই পড়ে সময় কাটান। এ জন্য তার বাড়িতে রয়েছে বিশাল সংগ্রহশালার একটি লাইব্রেরী।

স্বাধীন দেশের মানুষের কাছে গনি সিকদারের দাবি, মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা বাস্তবায়ন করে দেশের সমৃদ্ধি অর্জনে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুন।-

খোকন আহম্মেদ হীরা, গৌরনদী (বরিশাল) থেকে।