শুভব্রত দত্ত, বরিশালঃ সোমবার ভোররাতে সনাতন ধর্মবালম্বীদের মহালয়া শুরু হচ্ছে। দেবী দশভুজা দূর্গা আজ মন্দিরে মন্দিরে অধিষ্টিত করবেন। হিন্দুধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, কৈলাস ছেড়ে দেবী দূর্গা এই দিনে পিতৃগৃহে আসেন। বরিশাল জেলার বিভিন্ন মন্দিরে ও পূজামন্ডপে চন্ডিপাঠ, আহবান সংগীত ও প্রসাদ বিতরনের মধ্যে দিয়ে মহালয়ার কর্মসূচি পালিত হবে। অক্টবরের ২ তারিখ ষষ্ঠি পূজার মাধ্যমে দূর্গা পূজা শুরু হবে।
শরতের আকাশে-বাতাসে এখন যেন মন্দিত হচ্ছে 'রূপংদেহি, জয়ংদেহি, যশোদেহি, দ্বিষোজহি'র সুর লহরী। আবার এলো দেবীপক্ষ। দক্ষিণায়নের দিন। কৈলাস শিখর থেকে তার আগমনী বার্তায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে উৎসবের রোশনাই। আজ শেফালীঝরা শারদ প্রভাতে জলদকণ্ঠে চণ্ডীপাঠ আর পিতৃপক্ষের তর্পণের সমাপন ঘটবে। আজ ঘনঘটার অমাবস্যা তিথিতে প্রাণে দ্যোতনা তুলে ঢাকে পড়বে কাঠি। সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম মহালয়া। পুরাণে আছে: সৌর উত্তরায়ণকালে বিষ্ণুলোকে যখন দিন, যমলোকে তখন রাত-দক্ষিণায়ন। উত্তরায়ণের ছ'মাস দেবতারা জেগে থাকেন, বিষ্ণুলোকের তোরণ থাকে অবারিত। দক্ষিণায়নের ছ'মাস দেবতারা নিদ্রিত। কিন্তু যমলোকে দিনমান, দুয়ার খোলা। আজ দক্ষিণায়নের পয়লা দিনে ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠেই বদ্ধ দুয়ার ঠেলে পিতৃপুরুষেরা ছুটে আসবেন মর্ত্যলোকে। এ সময় তারা থাকেন ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর। উত্তরপুরুষদের হাতে একটু শ্রাদ্ধাহার পেলেই তারা পরম তৃপ্ত। সে অর্থে মহালয়া মর্ত্যলোকে পরলোকগত পিতৃগণের একত্র ক্ষণিক আবাস। দশ প্রহরণধারিণী দেবী দুর্গা আগমনক্ষণে এ যেন 'নান্দিমুখ'। দুর্গোৎসবের তিন পর্ব যথা: মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহালয়ায় পিতৃপক্ষ সাঙ্গ করে দেবীপক্ষের দিকে যাত্রা হয় শুরু।
বরিশাল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান,হিসাবে এবার বরিশাল জেলায় প্রায় ৫২৭ টি মণ্ডপে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে, যা গতবারের তুলনায় প্রায় ৩২ টি মন্ডপে বেশি। পূজাগুলোর মধ্যে রয়েছে বরিশাল নগরীতে ৩০টি,সদর উপজেলায় ১৮ টি,বানড়ীপাড়ায় ৪৮ টি,উজিরপুরে ৯৩টি,মুলাদীতে ১২ টি,বাকেরগঞ্জে ৬২টি,বাবুগঞ্জে ১৯,হিজলায় ৯টি,মেহেন্দিগঞ্জ ২১টি,গৌরনদীতে ৭৫টি ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় ১৪০টি পূজা মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।