কলাপাড়ায় শিক্ষিত এক যুবক শখের খামার করে সাবলম্বী

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ ৩৫ বছর বয়সি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাত্র ৪০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরের চিংগড়িয়া এলাকার গৌতম চন্দ্র হাওলাদারের শখ ও ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশীয় প্রজাতির পেঁপে গাছ রোপন ও  পশু পালন করে আর্থিক সাবলম্বী হয়েছে। বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত মাত্র ১০ শতাংশ জমির উপর ৫০ টি দেশীয় প্রজাতির পেঁপে চারা রোপন করেন। মাত্র পাঁচ ফুট উচ্চতার এ গাছ গুলোতে অর্ধেকটা জুড়েই শত শত পেঁপে ঝুলে রয়েছে। এ দৃষ্টিনন্দ দর্পন খামারটি পৌর শরের আলোরন সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিই তার এ শখের বাগান ও পশু পালন দেখতে শত শত মানুষ ভিড় করছে। তার সফল্য দেখে এখন উপকূলীয় সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত কলাপাড়ার শিক্ষিত বেকার যুবকরাও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সাবলম্বী হওয়া দর্পন খামারের মালিক গৌতম চন্দ্র হাওলাদার জানায়, ২০০৪ সালে তার লেখা পড়ার পাশা পাশি কৃষি ব্যংকের শাখা থেকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে দর্পন ব্লাক বেঙ্গল গোট প্রজনন ইউনিট ও এ্যগ্রো প্রকল্পের কলাপাড়া পৌর শহরের চিংগড়িয়া এলাকায় যাত্রা শুরু করেন। একই এলাকার জনৈক বৃদ্ধার কাছ থেকে ৫০ টাকায় একটি গাছ পাঁকা একটি পেঁপে ক্রয় করেন। পেঁপেটি খুব সুস্বাদু হওয়ায় তার ইচ্ছা জাগে বীজ সংগ্রহের। এর পর তার বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত ১০ শতাংশ জমিতে পেঁপের বীচি গুলো বপন করেন। ওই বীজ থেকে প্রায় ৫০/৬০টি চারা গজায়। কোন কীটনাশক ছাড়াই মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই তার পেঁপে গাছ গুলোতে অসংখ্য পেঁপে ধরে। তবে তিনি আরেও জানান,পরিশ্রম ও ইচ্ছা শক্তি থাকলেই অনেক বেকার যুবক সাবলম্বী হতে পতে। তার গাছে এ পেঁপে গুলো কাঁচা অবস্থায় বিক্রি না করে পাঁকা অবস্থায় বিক্রি করলে প্রতিটি পেঁপে স্থানীয় পাইকারদের কাছে কম পক্ষে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।  

এছাড়া ২০০৪ সালের দিকে ‘দর্পণ এ্যাগরো ফার্মস’ এর আওতায় ব্যাংকের ঋনসহ দেড় লাখ টাকা ব্যায়ে একটি ছাগল পালন প্রকল্প চালু করেন। সিডর ও আইলার নোনা পানির প্লাবনে তার ফার্মেটি ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। ওই সময় শতাধীক ছাগল আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তিনি বিভিন্ন সরকারি ও বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তার জন্য লিখিত ভাবে আবেদন করা হলেও কোন সহায়তা পাননি বলে জানান। পরে তিনি হতাশ না হয়ে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে লেখাপড়ার পাশা পাশি নিজের অর্থায়নে কৃষি কাজ ও পশু পালন পুনরায় শুরু করেন।

প্রতিভাবান এ যুবকের সাথে কথা বললে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, সমুদ্র উপকূলীয় কলাপাড়া উপজেলা একটি সম্ভাবনাময় এলাকা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর।এ মাটিতে সোনা ফলে। যদি উপযুক্ত সময়ে সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা পাওয়া য়ায় তা হলে এ এলাকার বেকার যুবকদের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।  

এব্যাপারে কলাপাড়া কৃষি কর্মকর্তা নিরুত্তম কুমার সরকার জানায়, যদি কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহর কিংবা প্রত্যন্ত গ্রামে ফলজ ও বনজ বাগান তৈরী করবেন তাদের আমরা সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি।