৬ মাস ১৯ দিন পরে লিমন রাজাপুরের নিজ বাড়িতে

ঝালকাঠি সংবাদদাতা: র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো কলেজ ছাত্র লিমন কৃত্রিম পা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে এলাকায় এসেছে। ৬ মাস ১৯ দিন পরে তার গ্রামের বাড়ি রাজাপুরের সাতুরিয়ার নিজ বাড়িতে এসে পৌছে। লিমনের সাথে ঢাকা থেকে আইন ও শালিস কেন্দ্রের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও আসেন। এরা হলেন- আইন ও শালিস কেন্দ্রের তদন্ত টিমের উপ-পরিচালক মোঃ টিপু সুলতান ও প্রশিক্ষক অনীর্বান সাহা। এ প্রতিনিধি দলটি সাতুরিয়ার গ্রামের বাড়িতে লিমনের নিরাপত্তার জন্য তাকে নিয়ে রাজাপুর থানার ওসি মোঃ তোফাজ্জেল হোসেনের সাথে দেখা করেন।

আইন ও শালিস কেন্দ্রের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে লিমন ও তার পরিবারের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন রাজাপুর থানার ওসি। পরে সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার ইঁদুর বাড়ি এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে লিমন কৃত্রিম পা দিয়ে হেটে আস্তে আস্তে নিজ বাড়িতে আসে। এ সময় এলাকাবাসি লিমনকে এক নজর দেখা ও কথা বলার জন্য ভিড় জমায়। লিমনের মা হেনোআরা বেগম ও তার বোন লাখি আক্তারসহ এলাকাবাসী ও স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে লিমন।

গ্রামবাসী ও আত্মীয় স্বজনদের আনন্দ আর কান্নার আবেগে এক হৃদয় বিদারক দৃৃশ্যের সৃষ্টি হয়। লিমন বাড়িতে এসে ঘরে প্রবেশ করে তার বই-খাতা জড়িয়ে ধরে বলে, আমি আবার লেখা পড়া শুরু করবো, আমাকে লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে হবে। লিমন বাড়িতে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, এখন আমার খুব ভাল লাগছে। আমি কৃত্রিম পা হলেও পায়ে হেটে বাড়িতে আসতে পেরেছি। লিমন দুঃখ প্রকাশ করে বলে, আমি আর কোন দিন পা দিয়ে খেলাধুলা করতে পারবো না। শুধু অন্যের তা দেখে যেতে হবে। লিমন প্রশাসনের সকলের কাছে তার বিরুদ্ধে র‌্যাবের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানায়।

লিমনের মা হেনোআরা বেগম বলেন, আমার অনেক ভাল লাগছে যে, আমার ছেলে কৃত্রিম পা দিয়ে হলেও হেটে বাড়িতে আসতে পেরেছে। আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা জানান, ঢাকার একটি হাসপাতালে কৃত্রিম পা লাগিয়ে চিকিৎসা শেষে আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষা দিতে কলেজের প্রস্তুতি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য লিমনকে গ্রামের বাড়ি আনা হয়েছে। তারা আরও জানান, লিমনের সাথে আমাদের যোগাযোগ থাকবে এবং তাকে সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৩ মার্চ র‌্যাবের গুলিতে আহত হয়ে পা হারায় কলেজ ছাত্র লিমন।