ধর্ষণকারী যখন পিতা…

শাহীন হাসান, বিশেষ প্রতিনিধি ॥ যুগের বিবর্তণে অসভ্য হয়ে উঠছে মানব প্রাণীগুলো। মনুষ্যত্ব লোপ পেতে শুরু করেছে যৌন ক্ষুধায়। পিতার লোলুপ দৃষ্টির শিকার এমনই এক কন্যার সাক্ষাৎ মিলে গতকাল কোতোয়ালী মডেল থানায়। পিতা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার মেয়েটির নাম সামিয়া আক্তার মিতু (১৩)। উজিরপুরের শিকারপুর এলাকার ভরসাকাঠী গ্রামের পৈশাচিক আচরণের অধিকারী এই পিতার নাম বেলায়েত খান (৪৫)। পিতার এই অদ্ভুত আচরণের শিকার কন্যা এসব ঘটনার পরও তার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেনি। সহানুভূতি দেখাতে এগিয়ে আসা বান্ধবীর পিতা আবুল কালাম আজাদকে মিথ্যা দোষারোপ করে উল্টো মামলা দেয়ায় নিষ্পাপ কন্যা মিতু এখন পুলিশের শ্রীঘরে। মেয়ে মিতুর বক্তব্য মতে, মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার প্রথম দিকে পিতা বেলায়েত প্রায়ই তার শরীরে হাত দিতেন। সরল মনে প্রথমদিকে সেগুলো আমলেই নেয়নি কন্যা মিতু। পরবর্তীতে মাস খানেক পর আকস্মিক এক রাতে পিতা বেলায়েত জোর পূর্বক মিতুকে ধর্ষণ করে। লজ্জায় সে সময় ঘটনার জানান দেননি মিতু। পরবর্তীতে আরেকদিন ছাদে ডেকে নিয়ে পিতা বেলায়েত ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে সে সময়ই উপস্থিত হন সৎ মা। দৃশ্য দেখেই অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। দৌড়ে পালায় পিতা বেলায়েত। কন্যা মিতু সৎ মাকে সুস্থ করে তোলে। কন্যা মিতু সে এলাকার ফজিলাতুন্নেছা হাফিজী মাদ্রাসার ছাত্রী। আপন মায়ের মৃত্যুর পর থেকে মিতুর লেখাপড়ার খরচ বন্ধ করে দেয় পিতা বেলায়েত। মিতুর দাদীকে এসব ঘটনা অবহিত করা হলে সংসারে এ নিয়ে সৃষ্টি হয় অশান্তি। পরে কন্যা মিতু পালিয়ে চলে যায় তার নানা বাড়ি। সেই থেকে খরচ বহন করতে ছিল ছোট চাচা মিন্টু। মাস খানেক পর চাচা মিন্টুও তার খরচ বহন করা বন্ধ করে দেয়। পরে সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয় মিতুর বান্ধবীর পিতা কুয়াকাটার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। পরে পুনরায় মিতুকে ধর্ষণকারী পিতা বেলায়েত মিতুকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে আপত্তি জানায় মিতু। সর্বশেষ ধর্ষক পিতা বেলায়েত তার কন্যা মিতু ও আবুল কালামের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করে (মামলা নং ৪৫ ১০/১১)। মামলা সূত্রে জানা যায়, তার পিতার অভিযোগ মিতুর সঙ্গে আবুল কালাম আজাদের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। পিতার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে মিতু বলেন, তাদের মধ্যে কোন রূপ অবৈধ সম্পর্ক নেই। পিতার দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে এসআই তাহের গতকাল মিতুকে তার গ্রাম থেকে আটক করে। এ ঘটনায় ধর্ষক পিতা বেলায়েতের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানার ওসি শাহেদুজ্জামান বলেন, আমি পুরো ঘটনা এখনো জানি না। তবে মিতুর সাথে কথা বললে সব জানা যাবে।