গৌরনদীতে প্রাইমারি স্কুলের একটি কক্ষে দু’শ্রেনীর পাঠদান ॥ বিঘ্নিত হচ্ছে পড়াশুনা

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ শ্রেনী কক্ষের অভাবে বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো দিয়াশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে দু’শ্রেনীর পাঠদান করানো হচ্ছে। ফলে চরম ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে শিশুদের পড়াশুনা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৪৩ বছর পূর্বে নির্মিত পুরাতন জরার্জীন ভবনের একটি কক্ষে শিশু ও প্রথম শ্রেনীর ক্লাশ চলছে। একই কক্ষে দু’জন শিক্ষিকা। একজন শিশু শ্রেনীর ৩০ জন শিক্ষার্থীদের, আরেকজন প্রথম শ্রেনীর ৫১ জন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। একটি কক্ষে একই সময় দু’শ্রেনীর ক্লাশ চলায় শিশুদের হৈ চৈ-এর শব্দে কিছুই বোঝা যাচ্ছিলো না। ওই ক্লাশ রুমের পার্শ্বের একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষিকা নিহার পারভীন পঞ্চম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নিচ্ছেন। অপর কক্ষে অন্যান্য ক্লাশের শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নিচ্ছেন শিক্ষকেরা।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান জানান, ১৯২০ সনে প্রতিষ্ঠিত দিয়াশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৬৮ সনে ভবন নির্মান করা হয়। ৪৩ বছর পূর্বে নির্মিত ভবনটি বহুআগেই ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পরেছে। তিনি আরো জানান, ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাঁটল ও অধিকাংশ স্থানের আস্তর খসে পরায় ভবনটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। এ অবস্থায় যেকোন সময় ভবনের ছাঁদ ধসে প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। গত দু’বছর পূর্বে পুরাতন ওই স্কুল ভবনের পার্শ্বে দু’কক্ষ বিশিষ্ট আরেকটি ভবন নির্মান করা হয়। তাতেও ক্লাশের জায়গা সংকুলান হচ্ছেনা।

প্রধান শিক্ষিকা নিহার পারভীন জানান, বর্তমানে স্কুল ৩২২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বরাবরই এ স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো হওয়ায় প্রতিবছরই স্কুলে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ক্লাশের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরম ভাবে বিঘিœত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে স্কুলে পাঁচটি ক্লাশ রুম থাকলেও যে পরিমান শিক্ষার্থী রয়েছে তাতে সাতটি ক্লাশ রুমের প্রয়োজন। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় বাধ্য হয়েই একটি কক্ষে দুইটি ক্লাশের পাঠদান করানো হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

স্থানীয়রা জরুরি ভিত্তিতে স্কুল ভবনের সমস্যা ও ক্লাশ রুম বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।