অনিশ্চয়তার মধ্যে বরিশালের প্রস্তাবিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট

উম্মে রুম্মান,বরিশাল ॥ প্রায় ১৫ কোটি টাকার জন্য স্থগীত হয়ে গেছে বরিশাল নগরীর রুপাতলীতে প্রস্তাবিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ কাজ। তবে চরবদনায় অচিরেই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট নির্মাণ কাজ শুরু হবার কথা থাকলেও তাও বাস্তবায়ন হবে কিনা তা এখনো চিশ্চিত নয় বিসিসি’র পানি শাখার প্রকৌশলী বিভাগ। সব মিলিয়ে শত চেস্টার পরও গত সারে ৪ বছরেও এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি সিটি কপোরেশন।

সূত্র মতে, নগরীর পানি সংকট নিরসনে ২০০৭ সালে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। সে লক্ষ্যে নগরীর কীর্তনখোলা নদী সংলগ্ন বেলতলা ও রূপাতলীতে দু’টি ট্রিটমেন্ট প্লান্টের অনুমোদন আসার পর ২০০৮ শুরু হয় জমি নির্ধারণের প্রক্রিয়া। টেন্ডারর প্রক্রিয়াও শেষ হয়। কায্যদশ দেয়া হয় সিগমা ও মেঘনা নামের দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু অমন্ত্রণালয় থেকে টাকা ছাড় না করার কারনে বছরের পর বছর ঝুলে থাকে প্রকল্পের  কাজ। এডিবির শুণ্য তহবিল থেকে ঐ টাকা বরাদ্দ দেওয়ায় সব কিছু মুখ থুবরে পড়েছিল। সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তদ্বির করে প্রকল্পের অর্থ ছাড় করান। কিন্তু টেন্ডার প্রক্রিয়ার পর  বেলতলার চরবদনায় খাস জমি চিহ্নিত করা গেলেও রূপাতলীর জমি নিয়ে দেখা দিয়ে ছিল জটিলতা। সেখানকার নির্ধারিত জমির উপরে রয়েছে বিদ্যুতের রিভাগ ক্রচিং’র তার। এ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে প্রায় এক বছর ধরে চিঠি চালাচালি হয়। এক পর্যায় সর্ত সপেক্ষে ওই স্থানে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করা যাবে বলে বিদ্যুৎ অফিস থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু ওই সর্ত পূরণ করতে গিয়ে সেখানা পুরো প্লান্ট বাতিল করে নতুন প্লান্ট তৈরি করতে হয় প্রকৌশলীকে।

এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ২০ কোটি করে ৪০ কোটি টাকায় দু’টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট নির্মাণ কাজের ব্যয়ভার নির্ধারন করা হয়েছিল। চরবদনার জমি খাস হওয়ার সুবাদে সেখানকার জমি ক্রয় নিয়ে তেমন কোন জামেলা না হলেও জটিল আকার ধারন করেছে রুপতলীর জমির ক্ষেত্রে। একদিকে নতুন প্লান্ট আর অন্যদিকে ৪ বছরের ব্যবধানে জমির মূল্য বেড়ে গেছে বলে জানাগেছে। তাই নির্ধারিত ওই ৪০ কোটি টাকায় একটি নির্মাণ করা সম্ভব হলেও অন্যটি নির্মান করা সম্ভব নয়।

অপরদিকে চলতি অর্ধ বছরে মন্ত্রনালয় থেকে অনুমদিত ৪০ কোটি টাকার অড়াই কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। বিসিসি ওই বরাদ্ধ পেয়ে গত দুই মাস পূর্বে ধিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চরবদনায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কাজ শুরুর জন্য চিঠি দিয়েছে। তাই আগামী মাসের মধ্যেই এ কাজ শুরু হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে।  তবে তাও বাস্তবায়ন হবে কিনা তা এখনো চিশ্চিত নয় বিসিসি’র পানি শাখার প্রকৌশলী বিভাগ। সেখানকার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুর রহমান বলেন, দুই মাস আগে চিঠি দেয়া হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন জবাব পাওয়া যায় নি। শুধু মৌখিক ভাকে জানাগেছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

অন্যদিকে রুপাতলীতে প্রস্তাবিত ওয়াটার ট্রিটমেন্টর ব্যপারে অনুমোদন আর  বিভিন্ন দপ্তরের ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে করতে সারে ৪ বছর ধরে লেগে গেছে। এতে করে সেখানে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’র জন্য নির্ধারিত ৬ দশমিক ৮৭ একর জমির মূল্য দ্বীগুন হয়ে গেছে। তারই ওই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট নির্মানের জন্য ধার্য্যকরা ২০ কোটি টাকা দিয়ে নির্মান কাজ শেষ করা মম্ভব নয়। ওই অর্থ দিয়ে জমিই ক্রয় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আরো ১৫ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে দাবী করেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুর রহমান। টাকার জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। কবে নাগাদ এর উত্তর পাওয়া যাবে তাও অনিশ্চিত। তাই প্রায় ১৫ কোটি টাকার জন্য স্থগীত হযে আছে বরিশাল নগরীর রুপাতলীতে প্রস্তাবিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ কাজ।