লাঠিয়াল আতংকে সাগর পাড়ের কৃষকদের তারাকরে বেড়াচ্ছে

উম্মে রুমান, বরিশাল ॥  সাগর পাড়ের কলাপাড়ায় কৃষকের আমন ক্ষেতে সোনালী ধান বাতাসে দুলছে। সবর্ত্র ছড়িয়ে পড়ছে মৌ-মৌ গন্ধ। আর কিছু দিনের মধ্যেই উপকূল জুড়ে শুরু হবে নতুন ধান কাটা উৎসব। কখন কেটে নেয় লাঠিয়ালরা তাদের স্বপ্নের সোনালী ধান। এ আসংখ্যায় শংকিত হয়ে পড়েছে উপকূলের কৃষকরা। ইতোমধ্যেই কৃষকরা রাত জেগে সোনালী ধান ক্ষেতে পাহাড়া দিতে শুরু করেছে।

সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সাগর পাড়ের কলাপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের শতকরা ৯০ ভাগ কৃষকের ক্ষেতের আমন ধান ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর। কয়েক দিন আগে যেসব কৃষকের চোখেমুখে হতাশার ছাপ ছিলো এখন সেই কৃষকদের মুখে আনন্দের হাসি বইতে শুরু করেছে। তবে লাঠিয়াল বাহীনির আতংকও ওইসব কৃষকদের তারাকরে বেড়াচ্ছে।

এবছর টানা দু’দফা প্রবল বর্ষণে সহ¯্রাধিক কৃষকের প্রায় ১০ হাজার একর আমন বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ওই সময় কৃষকরা আমন চারার সংকটে পরেন। কোন উপায় না পেয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে চারা চরা দামে ক্রয় করে  ক্ষেতে রোপণ করতে হয়েছে।

একাধিক কৃষকের সাথে আলাপ করলে তারা অভিযোগ করে জানান, এবার ১১’শ টাকা থেকে ১২’শ টাকা দিয়েও এক বস্তা ইউরিয়া সার কিনতে পরেনি। কলাপাড়া পৌর শহরসহ বিভন্ন বাজারে কোন সার পাওয়া যায়নি। এ কারণে ধানের উৎপাদনে প্রায় ১৫ দিন বেশি সময় লেগেছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ করেন। ৩০ জন চাষী মিলে সমন্বিতভাবে ৩০ একর জমিতে হাইব্রিডের আবাদ করেছেন। তাদের প্রত্যাশা একর প্রতি এক শ’ মন ধান ঘরে তুলতে পারবেন। ক্ষেতে সোনালী ধান ঘরে ওঠাবার স্বপ্নে এখন কৃষকরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। এ বছর প্রাকৃতীক দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাবে বলে কৃষকরা জানান।

চিংগরিয়া গ্রামের দর্পন এগ্রো ফার্মস লিমিটেটের পরিচালক গৌতম চন্দ্র হাওলাদার জানান,এই প্রথম বারের মতো আমার ৩০ শতাংশ জমিতে বিলুপ্ত প্রায় দেশী প্রজাতির ধান চাষ করেছি। মোটা ধানসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধানের বাম্পার ফলন পাবো। তবে তিনি জানান, উৎপাদন খরচের চেয়ে বাজারে ধানের দাম কম থাকায় আমরা শংকিত হয়ে পড়েছি। এছাড়া এ এলাকায় ত্র“টি পূর্ন ওজন ব্যবস্থার কারনে কৃষকরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। তিনি দাবী করেন ধান বেচা কেনার ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে দেকভাল করে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিলেই ওইসব কৃষকরা প্রতারনার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিরুত্তম কুমার সরকার জানান, এবছর এ উপজেলায় প্রায় ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। তিনি জানান,আমন ক্ষেতের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কৃষকরা এবার বাম্পার ফলন পবো।