বরগুনায় অপ-চিকিৎসায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যু

উম্মে রুম্মান, বরিশাল ॥ বরগুনার পাথরঘাটায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর পরে শাপলা ক্লিনিক ছেড়ে চিকিৎসকসহ কর্তৃপক্ষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে ওই ক্লিনিকের ভর্তি হওয়া ৭জন রোগী কেবিনের বিছানায় কাতরাচ্ছে। উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছহেরাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ মুসার স্ত্রী আছমা বেগম (২২) দেড়মাস আগে ভর্তি হলেও সিজারের পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যায়। শনিবার সকালে স্থানীয় জনতার রোশানলে পরে চিকিৎসক, নার্স ও মালিক পক্ষ পালিয়ে যায়। সকালে প্রসুতির লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা  মর্গে পাঠানো হয়েছে।

প্রসুতির স্বামী মুসা জানান, তার স্ত্রী আছমা বেগমের (২২) প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার পর পহেলা অক্টোবর পাথরঘাটা স¦াস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। পাথরঘাটা হাসপাতালে সিজারের সু-ব্যবস্থা না থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু আল ফাত্তাহ প্রসূতি আছমাকে সিজার করার জন্য স্থানীয় শাপলা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এসময় আছমার পরিবার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি মোতাবেক ডাঃ আবু আল ফাত্তাহ্ ওই ক্লিনিকে আছমার সিজার করেন। আছমার পরিবারের সদস্যরা জানান, দুইদিন পর আছমার সিজারের ক্ষত জায়গায় ইনফেকশন হওয়ার কারণে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়। পরে ২৬ অক্টোবর খুলনা থেকে আসা নামধারী ডাঃ চিত্তরঞ্জন দ্বিতীয়বার আবারও ক্ষত জায়গায় অপারেশন করেন। রোগীর অবস্থা আশংকাজনক দেখে ২ নভে¤¦র বরিশালে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হলে বরিশালের পলি ক্লিনিকের ডাঃ আনোয়ার হোসেন রোগীর করুন অবস্থা দেখে চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে রোগীর পরিবার পুনরায় পাথরঘাটা শাপলা ক্লিনিকে তাকে নিয়ে আসলে মালিক পক্ষ স্থানীয় জনতার রোশানলে পরে পালিয়ে যায়। আবারও আছমাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রওনা হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যায়। এ বিষয়ে বরিশালের পলি ক্লিনিকের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে জানান “আমছাকে অপারেশনের সময় চিকিৎসক মলত্যাগের রাস্তাটি কেটে ফেলেছে, যার ফলে মলত্যাগ করতে না পারায় সে মারা গেছে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, ওই ক্লিনিকটি এখন অরক্ষিত অবস্থায় পরে আছে। আমরা মালিক পক্ষ ছাড়া কিছুই করতে পারবো না। আর যদি কিছু করতে হয় তা হলে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর ব্যবস্থা নিব। উল্লে¬খ্য গত সেপ্টেম্বর মাসে একই ঘটনায় পাশ্ববর্তী স্থানে পাথরঘাটা সার্জিক্যাল ক্লিনিক নামে আরও একটি ক্লিনিক রোগীর মৃত্যুর পরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।