ওয়াচডগের – খালেদা জিয়ার কাছে খোলা চিঠি

দুর্মুখদের হিসাবে মাত্র চার দিন। আর এই চারদিনে আপনি বেতন ভাতা হিসাবে সরকারী কোষাগার হতে উঠিয়েছেন সর্বমোট ৪০ লাখ টাকা। ১০ লাখ টাকা দিন! কথায় কথায় আপনি বলে থাকেন আঁতাতের নির্বাচনে জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা হতে সড়ানো হয়েছে আপনাকে। হতে পারে তা সত্য। এ প্রসংগে দ্বিতীয় প্রশ্ন, তাই যদি হয় তাহলে পদত্যাগ করে বেরিয়ে আসছেন না কেন এমন পার্লামেন্ট হতে? নির্বাচন মানেন না, অথচ সে নির্বাচনের বদৌলতে বিরোধী দলীয় নেত্রীর আসনে বসে তাবৎ সুবিধা ভোগ করবেন, এ কেমন হিপোক্রেসি? আপনার ডিকশনারিতে সংসদ মানেই কি তাহলে প্রধানমন্ত্রিত্ব আর ক্ষমতা? বেলস পার্কে আপনি আওয়ামী লুটপাটের রামায়ণ হতে অনেক কিছুই উধৃত করেছেন। শুনে বেশ স্বস্তি লাগল। আর যাই হোক, চুরি চামারির খবর বিরোধী দলীয় নেত্রীর চোখ এড়ায় না! আপনি ঘটা করে না বললেও জনগণের এখন আর অজানা নয় আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীরা চুরি করছে। ক্ষমতায় যাব অথচ চুরি করবো না, এমনটা কি বাংলাদেশে কখনো হয়েছিল? এ প্রসংগে আমার তৃতীয় প্রশ্ন; ডানে বায়ে যাদের বসিয়ে বরিশালের আসর মাত করলেন তাদের তাহলে কি পরিচয়? ঢাকার নাসির উদ্দিন পিন্টু, আমানুল্লাহ আমান, নাজমুল হুদা, মওদুদ আহমদ, চট্টগ্রামের মীর নাসির, আবদুল্লাহ নোমান সহ আপনার সাংগ পাংগদের সবার নামের আগে পিছেই চুরির তঘমা লাগানো আছে, যা হতে আপনি এবং আপনার নিজের পরিবারও মুক্ত নয়। আপনি চাইলেই কি পারতেন বেলস পার্কের মঞ্চে অন্তত একজন মুমিন বিএনপি নেতাকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে? এমন একজনকে তুলে ধরতে পারলে কথা দিচ্ছি এই অধম ওয়াচডগ বাকি জীবন আপনার বিউটি বক্সের বোঝা টানবে।

বিনা টেন্ডারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেষ্টা করা হলে আপনি আগাম মামলার হুমকি দিয়ে রেখেছেন। এ হুমকিকে আমরা কিভাবে অনুবাদ করবো দয়া করে বলবেন কি? বাংলাদেশে টেন্ডার মানেই চুরি। আজকের ছাত্রলীগ টেন্ডারের মূর্তিমান আতংক, এ নিয়ে শেখ হাসিনার মসনদ টলটলায়মান। টেন্ডারের নিশ্চয়তা চেয়ে আপনি বরং আওয়ামী নেতাদের চুরির রাস্তা পরিস্কার করতে চাইছেন, কি এর রহস্য? আপনার ডানে বায়ের সিপাহশালাদের প্রায় সবাই টেন্ডার বানিজ্যের গডফাদার। এই টেন্ডারের উপর ভরসা করেই আওয়ামীদের মত আপনার দলের নেতারাও নির্বাচনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন। ক্যাসিনো গেম্বলিং’এর মত এ যাত্রায় আপনারা হেরে গেছেন, তাতে কি, জুয়া খেলতে থাকলে সামনে যে জিতবেন না তারই বা অনিশ্চয়তা কোথায়?

জনাবা খালেদা জিয়া, দেশে সমস্যার অন্ত নেই। এর রাতারাতি সমাধান যেমন শেখ হাসিনার হাতে নেই, তেমনি নেই আপনার হাতেও। জনগণের দুঃখ দুর্দশাকে পুঁজি করে মিথ্যার বেশাতি আর কত করবেন? আর কত এ দেশের মানুষকে পারিবারিক ভৃত্য ভাববেন? আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ বাড়ছে, হয়ত একদিন তা ফুলে ফেপে বিস্ফোরিত হতে পারে। শুধু একবারের জন্যে এ ফুলে ফেপে উঠাকে জনগণের ভেতর হতে আসতে দিন। বিএনপি নামের ন্যাশনাল কলংক জনগণের দাবির সাথে সম্পৃক্ত হলেই তা রূপ নেবে লুটপাটের বখরার লড়াইয়ে। এমন লড়াই আমরা বেশ কটা দেখেছি, দেখেছি এবং শিখেছি। এ শিক্ষা আমাদের একটাই উপসংহারে আসতে সাহায্য করে, আপনি এবং আপনার দলের সরকার পতনের আন্দোলন শ্রেফ লুটপাটের রাজত্ব ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। ন্যাড়াকে বারবার বেলতলায় ঠেলে দেবেন না দয়া করে।

যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন। সত্য বলার চেষ্টা করুন।

ওয়াচডগ


লেখক : ওয়াচ ডগ – AmiBangladeshi.OrG