হাতুরে টেকনিশিয়ান দিয়ে চলছে বরিশালের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

উম্মে রুম্মান, বরিশাল ॥ বরিশাল নগরীর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চলছে হাতুড়ে টেকনিশিয়ান দ্বারা। এ জন্য রিপোর্ট নিয়ে প্রতারনার শিকার রোগীরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আইন অনুযায়ী টেকনিশিয়ানকে অবশ্যই সরকারি বা বেসরকারি ডিপ্লোমাধারী অথবা সংশি¬ষ্ট বিষয়ে কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হতে হবে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় অর্ধেকেরও বেশি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে এমএলএসএস মর্যাদার টেকনিশিয়ানের কাজ করানো হচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ বা এসএসসি আবার কেউ অষ্টম শ্রেণী বা বকলম। ডিপ্লোমাধারী রয়েছে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে আম্বিয়া হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মেনিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম পাওয়া যায় মাত্র। কিন্তু নগরীর শুভ ডায়াগনস্টিক, কনিকা ডায়াগনস্টিক, লাইফ লাইন ডায়াগনস্টিক, সেভ হেলথ ক্লিনিক, গ্র“প ল্যাবরেটরী, খোদেজা ক্লিনিক, গ্রীন ডায়াগনস্টিক ল্যাব, গে¬াব ডায়াগনস্টিক, ল্যাবস্টার ডায়াগনস্টিক, ডক্টরস ল্যাব, লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক, মেট্রো ডায়াগনস্টিকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোন ডিপ্লোমাধারী টেকনিশিয়ান নেই। এমনকি অষ্টম শ্রেণী পাশ এবং জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত এমএলএসএস দিয়ে চালাচ্ছে টেকনোলোজিষ্টের কাজ।

এসব প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, শুভ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক্সরে টেকনিয়শিয়ান মনির অষ্টম শ্রেণী পাশ এবং প্যাথলজি টেকনিশিয়ান হালিম এবং রাজু উভয়ই এসএসসি পাশ। তাদের কোন ডিপ্লোমা নেই। এরূপ চিত্র দেখা গেছে নগরীর বিতর্কিত ইডেন ক্লিনিকে গিয়ে। রোগ নির্ণয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তরে অনভিজ্ঞ এবং ডিপ্লোমাধারী নয় এমন লোকবল দিয়ে টেষ্ট করেন, তাতে কি যথাযথ ভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ক্লিনিকের মালিক বলেন শর্তানুসারে লোক পাওয়া যায় না। বরিশাল স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, বিষয়টি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। রোগীরাতে সরাসরি প্রতারিত হচ্ছে।  কারণ টেকনিশিয়ানকে অবশ্যই সংশি¬ষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী হতে হবে। অন্যথায় প্যাথলজিষ্ট ডক্তার রিপোর্ট সঠিক দিতে পারবে না।

একই ভাবে সিভিল সার্জন বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে পদক্ষেপ নিতে সহজ হয়। পদকেষপ নেয়ার ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য পরিচালক অফিসের সমন্বয়ে একটি কমিটি আছে। ঐ কমিটি  সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পরিদর্শনে গেলে তাদের কাছে এসব অভিযোগ প্রমানিত হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গোপণ সূত্রে জানা যায়, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের মালিক যখন রেজিঃ পেতে স্বাস্থ্য বিভাগে কাগজ পাঠায়, তখন অনেকটা ঠিকঠাক থাকে কিন্তু সরেজমিনে এরকম নানা অনিয়ম দেখা যায়।  তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া যায় না। যার জন্য পাড় পেয়ে যাচ্ছে অনিয়মকে সঙ্গী করেও।