পরীক্ষার নামে ইচ্ছা মাফিক পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে নগরীর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

শাহীন হাসান, বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মহানগর এলাকায় ক্লিনিক ও ডাগনস্টিক সেন্টারগুলোতে চলছে মালিকদের ইচ্ছা মাফিক টেস্ট বানিজ্য। সরকারি কোন বিধিমালার দিকে কোন নজর নেই তাদের। রোগি নর্ণয়ের পরীক্ষা-নীরিক্ষা মূল্যেও রয়েছে ব্যাপক ভিন্নতা।

স্বাস্থ্য পরিচালক অফিস সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেসে সরকারি একটি রেট চার্ট দেয়া আছে বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা পরিচালনার জন্য। নিয়ম হলো রেট চার্ট স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের চোখে পড়ার মতো স্থানে লাগিয়ে রাখার। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, ৭২টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ১টিতেও উল্লেখিত মূল্য তালিকা নেই। এমনকি মালিকরাও জানেন না এমনি ধরনের নিয়মের কথা। নগরীর একমাত্র ডায়াবেটিস হাসপাতালে তাদের নিজস্ব সংগঠন নার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে  নির্ধারিত রেট চার্ট লাগানো রয়েছে। অন্যান্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকগুলোতে তাদের নিজস্ব রেট চার্টও নেই। নগরীর সদর হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল প্যাথলজী রের্ট চার্ট রয়েছে। সেই সূত্রে জানা যায়, ব্লাড-টিসি, ডিসি ও হিমোগ্লোবিন একত্রে ১৫০ টাকা, এইচবিএসএজি ১৫০ টাকা, এক্স-রে-৭০ টাকা, আল্ট্রাসনোগ্রাম সিঙ্গেল ১১০ এবং ডাবল ২২০ টাকা নেয়া হয় জনপ্রতি। বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকগুলোতে প্রতি টেস্টে এই রেটের চেয়ে প্রায় ৪ গুন বেশি নেয়া হয়। যেমন মেডিনোভায় ডাবল আল্ট্রাসনোগ্রাম হোল এবডোমেন ৬৫০, মিডেল এবডোমেন ৫৭৫ এবং লো এবডোমেন ৪৭৫ টাকা করে নেয়া হয়। অন্যান্য ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিকগুলোতেও ঠিক একই হারে না হলে ৫০ টাকা কম নেয়া হয়।

আবার এ্যাপোলো, বেলভিউসহ কতিপয় প্রতিষ্ঠানে একই মূল্য রাখা হয়। সরকারি রেটের চেয়ে ৪ গুন বেশি এবং তাও আবার প্রতিষ্ঠান ভেদে নিরীক্ষণ মূল্যের ভিন্নতার বিষয়ে মালিক জানান, মেশিনারিজ মানগত পার্থক্য রযেছে। যেমন কারো আল্টাসনো মেশিনের ডপলার সাদা-কালো বা রঙ্গিন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত পার্থক্যের একটা বিষয় রয়েছে। কিন্তু সরকারি রেটের চেয়ে প্রায় ৪ গুন বেশি মূল্য রাখেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমাদের একটি সংগঠন আছে এবং এর দ্বারা নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুযায়ী  ব্যবসা করা হয়। সরকারি কোন রেট চার্ট অনুসরণ করেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, স্বাস্থ্য পরিচালক অফিস আমাদেরকে এমন কোন মূল্য তালিকা বা নির্দেশ দেয়নি।

স্বাস্থ্য পরিচালকের ০১৭১১১৮৬২৮১ নাম্বারে ফোন করলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি জানি না। তবে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়অ হবে। তাকে বলায় হয় নগরীর ৭২টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক রয়েছে আপনাদের হিসেব মতে, কিন্তু এর বাইরেও রয়েছে প্রায় শ’ খানেকের মত। এদেরতো একেক রকম নীরিক্ষা মূল্য। সেক্ষেত্রে রোগীরা কেন বাড়তি পয়সা দিবে এবং অভিযোগই কোথায় জানাবে। এর কোন যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেন নি পরিচালক স্বাস্থ্য।