বরিশাল ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে গ্রাহকদের হয়রানির স্বীকার

শাহীন হাসান, বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বরিশাল ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে নাটকীয়তার কোন শেষ নেই। গ্রাহক হয়রানী যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাড়িয়েছে। ডাচ্ বাংলা DBBLব্যাংকে যাওয়া মাত্র অনেক গ্রাহক প্রতারনার শিকার হয়ে ফিরে আসছেন। ব্যাংকের অনেক ঘটনাই ধামাচাপা দিচ্ছেন ব্যাংকের ম্যানেজার মাহফুজ এবং সেকেন্ড অফিসার।

অনেক সময় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে গিয়ে হয়রানী হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। সিসি ক্যামেরা থাকার পরও গ্রাহকরা প্রতারিত হচ্ছে। সিডি দেখতে চাইলেও পাচ্ছে না গ্রাহকরা। অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় গ্রাহকদের। কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিজেদের ব্যক্তিগত কাজ করার পরে গ্রাহক সেবা করে থাকেন। এর জন্য গ্রাহকদের ভীড় বেড়ে যায়।

সূত্র জানায়, ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের প্রতারনা কোন নতুন ঘটনা নয়। বিশেষ করে মহিলারা বেশি হয়রানি ও প্রতারিত হয়। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে গত ২৭ নভেম্বর। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করেন সিকিউরিটি গার্ড শাহ আলমকে। নাজমা আক্তারের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায় সিকিউরিটি গার্ড এর ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমে। নাজমা বেগম প্রতিবাদ করায় ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায় সকলের কাছে। মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখে নিরাপত্তার জন্য, কিন্তু ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে গেলে নিরাপত্তা দেয়া দুরের কথা রীতিমত আতংকে থাকতে হয় গ্রাহকদের। কোন রুমে সিসি ক্যামেরা আছে আর কোন রুমে নেই তা বোঝার কোন সাধ্য নেই ব্যাংকে গেলে। বুথে টাকা তুলতে গেলে অনেক সময় জাল টাকা পাওয়া যায়। একাধিক গ্রাহক এ বিষয় ম্যানেজারকে জানালে তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি বরং অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয় গ্রাহকদের।

একাধিক গ্রাহক বলেন ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সময় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এক চেহারা দেখা যায়, একাউন্ট খোলার পরে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। এ ব্যাংকে সিটি ক্যামেরা থাকা সত্বেও সত্য ঘটনা অনেক সময় মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়। অনেকে  প্রতিবাদ করতে গিয়েও ফিরে আসতে হয় ব্যাংক থেকে। ব্যাংকের একাধিক গ্রাহকদের সাথে কথা বলতে গেলে সাংবাদিকদের জানান, আগে যে নিয়ম শৃঙ্খলা ছিল ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে এখন তা নেই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কিছু বললে তারা গুরুত্ব দেয় না এমনকি বুথে টাকা না পাওয়া গেলে তাদের কাছে জানতে গেলে তারা খারাপ ব্যবহার করেন। গ্রাহকরা আরো জানান, বুথের টাকাগুলো কোথায় যাচ্ছে। গ্রাহকরা ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে টাকা পাচ্ছে না। এমনটা চলতে থাকলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের প্রতি সাধারণ গ্রাহকদের আস্থা হারিয়ে ফেলবে। ম্যানেজার মাহফুজ যেন সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করেছেন।

ব্যাংক ম্যানেজার মাহফুজ জানান, বরিশাল ব্রাঞ্চে এমন কোন দুর্নীতি ঘটেনি যেটা আমি জানি না। গ্রাহকদের সেবা প্রদান করা আমাদের কাজ। তাদের কোন অভিযোগ থাকলে এখানে একটা অভিযোগ বাক্স রাখা আছে যার যে অভিযোগ তা এ বাক্সে দিলে আমরা সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকি। ১৭ নভেম্বরের ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ডকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়নি পুরোপুরি ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। মাস খানেক আগে ব্যাংকে কিছু ঝামেলা হয়েছিল তা এখন আর নেই। নাজমা আক্তারের যে অভিযোগ ছিল তা তিনি তুলে নিয়েছেন। সিকিউরিটি গার্ডের ব্যাপারে আমরা জানি না, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এলিট ফোর্স কোম্পানীর মাধ্যমে সিকিউরিটি গার্ডের ব্যবস্থা করে। বেশ কয়েক বছর ধরে তারা সিকিউরিটি সরবরাহ দিয়ে থাকেন।