পৃথিবীর সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট কানেকশন

(প্রিয় টেক) কিছুদিন আগে প্রিয় টেকের প্রযুক্তি পাগল মানুষদের আমরা জানিয়েছিলাম কানাডার দ্রুতগতি সম্পন্ন ইন্টারনেটের কথা। সে খবরে অনেকেই দুঃখ পেয়েছিল, এবার তার সাথে যোগ করছি আরেকটু কষ্ট। সিসকো আর টেলিয়া পৃথিবীর সর্বোচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশন তৈরি করছে।

এই সপ্তাহ শেষের মধ্যে সিসকো আর টেলিয়া ১২০ গিগাবিটস/সেকেন্ডের গতি পণ করেছে। আর এই কাজটি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সুইডেনের ডিজিটাল ফেস্টিভ্যাল "ড্রিমহ্যাক" উপলক্ষে। গিনিজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী এই ফেস্টিভটি "পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ল্যান পার্টি" হিসেবে স্বীকৃত। ধারণা করা হয়েছে এ বছর এই মেলায় অংশ গ্রহণ করবে বিশ হাজারেরো বেশি মানুষ। আর তাদের সাহায্য নিয়েই এই নেটওয়ার্কের ক্ষমতার সদ্ব্যবহার (capacity utilization) উপর বিশ্ব রেকর্ডটিকে ভঙ্গ করবার চেষ্টা করা হবে।

২৪ শে নভেম্বর জনকোপিং-এর এলমিয়ায় প্রারম্ভিক অনুষ্ঠানে এই রেকর্ড ভঙ্গ করার প্রচেষ্টা চালানো হবে। সকল অংশগ্রহণকারী এই সময় একত্রীত হয়ে যতখানি সম্ভব নেটওয়ার্ক ক্ষমতাকে ব্যাবহার করা হবে।

"পৃথিবীর দ্রুতগামী নেটওয়ার্ক তৈরিতে অংশ নিতে পারাটা বিশাল একটা ব্যাপার। এর সাথে সাথে আমরা আমাদের সরঞ্জামগুলো এক্সট্রিম কন্ডিশনে পরীক্ষা করবার সুযোগও পেয়ে যাচ্ছি। ১২০ গিগাবিট ভয়াবহ রকম গতি বলে মনে হলে ইন্টারনেটে ডাটা এবং ভিডিও ট্র্যাফিক দিন দিন বেড়েই চলেছে আর তাই এই রকম গতি সম্পন্ন ব্রডব্যান্ডের প্রয়োজন রয়েছে। ড্রিমহ্যাক আমাদেরকে ভবিষ্যতের গতি পরীক্ষা করবার সুযোগ দিচ্ছে।" বলেছেন সিসকোর সেলস ম্যানেজার জন ম্যালগ্রেন।

এই দুই কোম্পানি জনকোপিং থেকে স্টকহোম পর্যন্ত ৩০০ কিলোমিটার লম্বা একটি কানেকশন তৈরি করবার কাজে লিপ্ত রয়েছে যা ৭৫০,০০০ মানুষকে বিদ্যুৎ-গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা দিবে। এতখানি দূরত্বে এত ব্যাপক গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ-এর পূর্বে কোথায় ব্যবহার করা হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ গত গ্রীষ্ম থেকে শুরু হয়েছে, টেলিয়া ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরি করবার কাজে নিযুক্ত হয় আর সিসকো হার্ডওয়্যার অংশটি একজোড়া সিআরএস-৩ রাউটার নিয়ে দেখা শোনা করছে। কোম্পানিদ্বয় জানিয়েছে, তারা সফল ভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারলে "ক্যাপাসিটি ইউটিলাইজেশন" নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে একটা রেকর্ড তৈরি করবে। যার মাধ্যমে ৭৫০ হাজার মানুষ একসাথে মিউজিক স্ট্রিম করতে পারবে আর একটা মুভি ডাউনলোড করতে পারবে মাত্র .০৪৭ সেকেন্ডে। আরোও সহজভাবে যদি বলা হয় তাহলে বলতে হবে চীনের ১.৩ বিলিয়ন মানুষ একই সঙ্গে ভিডিও কল করতে পারবে।

সত্যি কথা বলতে গেলে এই খবর পড়তে গিয়ে আমার মুখ যত হা হয়েছে সে হা বন্ধ করতে এর চাইতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়ে পড়বে। হায় আমাদের দেশে এই গতি আমরা কবে পাবো!

 

কানাডায় ১০০ গিগাবিটের ইন্টারনেট চালু হলো

ঢাকায় আমরা ১ মেগাবিটস/সে. গতির জন্য মাথার চুল ছিড়ছি, সকাল বিকাল ক্যাবল কাটার যন্ত্রনায় ভুগি। সেখানে মানুষ ১০ মেগাবিটস/সে. পেলে খুশিতে আটখানা। সে অনুপাতে কানাডার মতো উন্নত দেশে একজন গ্রাহক না হয় ১ গিগাবিটস/সে. গতির ইন্টারনেট পাক! তা নয়, সেটা এমনকি ১০ গিগাবিটস/সে. ছাড়িয়ে এখন তারা বসালো ১০০ গিগাবিটস/সে. গতির ইন্টারনেট।

কানাডার "শ (Shaw) ক্যাবল" আর আলকাটেল-লুসেন্ট মিলে চালু করলো ১০০ গিগাবিটস/সে. ইন্টারনেট। ক্যালগ্যারি আর এডমন্টন শহরের ভেতর ট্রায়াল সফল হওয়ার পর তারা এখন এই ইন্টারসিটি ফাইবার-অপটিক নেটওয়ার্ক বানিজ্যিকভাবে চালু করেছে।

এই নেটওয়ার্কটি একসাথে ১৩৩ মিলিয়ন ভয়েস কল চলতে পারে, নয়তো ৪,৪০,০০০ এইচ.ডি টিভি চ্যানেল, কিংবা ৪৪ টি ব্লু-রে ডিস্ক।

শ ক‌্যাবল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে যে, মানুষ প্রতিনিয়ত দ্রুত গতির ইন্টারনেট চাইছে; আর তাদের এই চাহিদা মেটাতেই সবচে ভালো ইন্টারনেট অভিজ্ঞতা দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করা হচ্ছে।