অন্ধত্ব দমাতে পারেনি বদিউল আলমকে

প্রতিবন্ধিরা সমাজের বোঝা নয়। এ দিপ্ত শপথ নিয়ে প্রতিবন্ধিদের স্বাবলম্বী করতে জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মো. বদিউল আলম বাবুল। চোখে আলো নেই তার। তবুও তিনি নিজেকে শিক্ষার আলোয় অলোকিত করে সমাজের প্রতিবন্ধিদের আলোকিত করার প্রত্যয় নিয়ে নেমেছেন জীবন সংগ্রামে।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বারপাইকা গ্রামের মৃত মো. এরফান শাহ পুত্র বদিউল আলম জানান, জন্মের ৪ বছর পর ১৯৭৭ সালে জল বসন্ত (চিকেন পক্স) রোগে আক্রান্ত হয়। হত দরিদ্র পিতা টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেননি। বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে তিনি দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলেন। শৈশব থেকে তিনি ভাবেন পরিবার ও সমাজের বোঝা হবেন না। তিনি নিজেকে শিক্ষার আলোয় অলোকিত করে সমাজের প্রতিবন্ধিদের আলোকিত করার প্রত্যয় নিয়ে নেত্রকোনা অন্ধ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে লেখাপড়া শুরু করে অগৈলঝাড়া শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ থেকে সাইটেড পারসন দ্বারা পরিক্ষা দিয়ে বিএ পাস করেন। ১৯৯১ সালে প্রতিবন্ধিদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ও পূর্ণবাসনের লক্ষে বদিউল আলম ‘প্রতিবন্ধি উন্নয়ন সংস্থা’ (বিপিইউএস) নামের একটি বে-সরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত সংস্থার মাধ্যমে তিনি গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুরসহ পার্শ্ববতী এলাকার প্রতিবন্ধিদের মানবিক ও দক্ষতা প্রশিক্ষন, দর্জি, বাঁশ বেত শিল্প, হাঁস মুরগী ও গবাদী পশু পালনের প্রশিক্ষন দিয়ে সহজ শর্তে ও বিনামুল্যে ঋন দিয়ে এ যাবৎ ২২০ জন প্রতিবন্ধিকে স্বাবলম্বী করেছেন। বদিউল আলম আরো জানান, ভবিষ্যতে তিনি প্রতিবন্ধি আবাসিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন করে প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষন দিয়ে পূর্ণবাসন করবেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান গোলাম মোর্তুজা খান বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বদিউল আলমের কর্মকান্ড প্রসংশনীয়। তার এ কর্মকান্ডে অনেক প্রতিবন্ধীরা আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন।