ধুঁকছে শিক্ষার্থীরা, ভোগছেন অভিভাবকরা কোচিং বাণিজ্যে প্রতারণা

শাহীন হাসান, বরিশালঃ আমাদের কোচিং সেন্টার থেকে প্রতি বছর জিলা স্কুলে এবং সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ১০ জন অংশগ্রহণ করে থাকে। আবার অন্য আরেকজন বলেন, আমরা অত্যন্ত নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছেলেমেয়েদের পড়াই, যার কারণে এখান থেকে শিক্ষার্থীদের সরকারি স্কুলে অংশগ্রহণ শতভাগ সুনিশ্চিত। এভাবেই বুলি সর্বস্ব বাণী দিয়ে চলছে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা নগরীর প্রায় অর্ধশত কোচিং সেন্টার এবং কোচিং হোম। প্রায় ৪ লাখ জনমানবপূর্ণ এ নগরীতে দুটি মাত্র সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়; জিলা স্কুল এবং সদর গার্লস। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে সকল অভিভাবকই চান তার সন্তানটি কম খরচে একটু ভালো মানের শিক্ষা পাক। যা এই দুই স্কুলেই কেবলমাত্র সম্ভব বলে তারা মনে করেন। আর এ দুই স্কুলে ভর্তিইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই সম্মুখীন হয় ভয়ঙ্কর ভর্তি যুদ্ধে। আর এ যুদ্ধকে পুঁজি করে অবৈধ কোচিং ব্যবসায় নেমেছে নগরের এক শ্রেণীর যুবক এবং শিক্ষকরা। তারা নানা ভাবে অভিভাবকদের ভুল বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর অভিভাবকরা না বুঝেই সরকারি স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করাতে মরিয়া হয়ে তুলে দিচ্ছেন কোচিং সেন্টারে। বর্তমান সরকারের সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করার জোর মিশন চালু থাকলেও বরিশালে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এরা অবাধে ভর্তি কোচিং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বীরদর্পে। এ বিষয়ে আলাপকালে বরিশাল জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া জেসমিন জানান, আমাদের স্কুলের ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় খোদ জেলা প্রশাসক নিয়ন্ত্রণ করেন। পরীক্ষা প্রশ্নপত্র প্রস্তুত, হল পরিদর্শন এবং ফলাফল সব কিছুই ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। তাই কোন অভিযোগ করার অবকাশ নেই। প্রতি বছর কোন না কোন অভিভাবক কোন কোন ক্ষেত্রে অভিযোগ করেন বটে, তবে তার পুরোটাই ভিত্তিহীন। কারণ কারো সন্তান ভর্তি হতে না পারলে তার কিচু অভিযোগ থাকতেই পারে। তিনি নগরের কোচিং সেন্টার সম্পর্কে বলেন, বাইরে কে কি করলো তাতে আমাদের দায়বদ্ধতা নেই। এ রকম কোন অভিযোগ থাকলে অবশ্যই প্রশাসন ব্যবস্থা নেবেন। এর সাথে আমাদের কোন শিক্ষক সম্পৃক্ত নয়। বহুল আলোচিত শিক্ষক মানিক ও সিকদার স্যার সম্পর্কে জানতে চাইলে পাপিয়া জেসমিন বলেন, তারা তাদের মেধা দিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছেন। সেখান থেকে ছেলেরা ভর্তি হতে পারলে সেটা তাদের ব্যাপার। যারা এ রকম ভর্তি পরীক্ষার জন্য পড়ায় বা কোন ধরনের কোন ত্র“টি পাওয়া যায় তাদেরকে ভর্তি পরীক্ষার সময় গার্ডদের দায়িত্ব তো দূরের কথা, পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যাপারেও নিয়োগ করা হয় না। অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং নিখুঁত ভাবে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেন ছেলেমেয়েদের নিয়ে হুড়োহুড়ি না করে সাধারণ পদ্ধতিতে সন্তানকে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করেন। শীঘ্রই প্রশাসন নগরীর লোক ঠকানো এসব কোচিং সেন্টার বন্ধ করবে তার পানেই তাকিয়ে নগরীর সচেতন জনতা।