গৌরনদীতে মিনু হত্যা মামলায় অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশের পরিবারকে হয়রানীর অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর বাউরগাতি গ্রামের ইদ্রিস তালুকদার হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি মিনু বেগমকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবু আব্দুল্লাহ তালুকদারকে হাজত খাটানোসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে হয়রানীর অভিযোগ করা হয়েছে।  গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় গৌরনদী প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের পুত্র মোঃ মোহসীন হোসেন ফারুক এ অভিযোগ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে ফারুক বলেন, নিহত মিনু বেগমের পুত্রবধু লাইজু বেগম ওরফে লাইলী তার দেবর সেন্টু মোল্ল¬া, শ্বশুর কাদের মোল্লা ও তাদের সহযোগীরা ষড়যন্ত্র করে মিনু বেগম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদেরকে বাঁচাতে তার নির্দোষ পিতা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবু আব্দুল্লাহ তালুকদারকে হাজত খাটাচ্ছে ও পরিবারের সদস্যদেরকে হয়রানী করছে। উত্তর বাউরগাতি গ্রামের ইদ্রিস তালুকদার হত্যা মামলার সন্দেহ ভাজন আসামি হিসেবে মিনু গ্রেফতার  হয়েছিল। কয়েক মাস হাজত বাস করে মিনু জামিন লাভ করে। এরপর ইদ্রিস হত্যার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে মিনুর বড় পুত্র মিন্টু মোল্ল¬¬াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  বর্তমানে মিন্টু জেল হাজতে আছে। এরপর গ্রেফতারে ভয়ে মিনুর স্বামী কাদের মোল্লা গাÑঢাকা দেয়। নিহত ইদ্রিস তালুকদার আমার পিতা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল্ল¬াহ তালুকদারের একই বংশের নিকট আত্মীয়। তাই ইদ্রিস তালুকদার খুনের মামল্ াচালাতে আমার পিতা ইদ্রিসের স্ত্রীকে সহযোগীতা করেন। এ কারনে মিনু বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের সব আক্রোশ গিয়ে পড়ে আমার পিতা আব্দুল্লাহ তালুকদারের উপর। মিনু হত্যাকান্ডের পরে মিনুর মেঝ পুত্র সেন্টু মোল্ল¬া তার মায়ের হত্যা মামলার এজাহারের উল্লে¬খ করেছে যে, জমি-জমা নিয়ে আব্দুল্ল¬াহ তালুকদারের সাথে তাদের বিরোধ আছে। জমিজমা নিয়ে মিনুর পরিবারের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই। বাদী এটা প্রমানও করতে পারবে না।

মামলার এজাহারে বাদীর দেয়া তথ্যের ভেতরেও বেশ গড়মিল রয়েছে দাবী করে ফারুক বলেন, বাদী তার এজাহারে লিখেছে আমার মা মিনু বেগম ৩ নভেম্বর প্রতি দিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে বসত ঘরের পশ্চিম বারান্দায় চৌকিতে আমার ছোট বোন সাথী (১১) কে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ফজরের আযানের পর পরই আমার বোন ঘুমের মধ্যে খাট থেকে পড়ে গিয়ে বুঝতে পারে যে আমার মা ঘরে নেই। তখন লাইজু বেগম ঘরের ভেতর থেকে বলে ফজরের নামাজ পড়ে রিলিফের স্লিপ আনার জন্য মা হয়ত মেম্বারের বাড়ি গেছে। ওইদিন বাদীর ভাবি লাইজু বেগম শাশুড়ী মিনু বেগমকে বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করে। গত ৫ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে লাইজু বেগম ও বাদীর ফুপাতো ভাইয়ের স্ত্রী পারুল বেগম বাড়ির পশ্চিম পাশের ধান ক্ষেতে মিনু বেগমের লাশ উপুর অবস্থায় দেখতে পায়। চিৎ করে দেয়। এজাহারের এ বর্ননার মধ্যেই মিনু বেগম হত্যার আসল রহস্য লুকিয়ে আছে দাবী করে ফারুক তার লিখিত বক্তব্যে আরো দাবী করেন, মিনু বেগম হত্যাকান্ডের সাথে তার পুত্র বধু সুচতুর লাইজু বেগম জড়িত আছে। লাইজু বেগম তার কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোজ না করে কিভাবে বুঝল ধান ক্ষেতে মিনু বেগমের লাশ আছে ? ঘটনাস্থলের ধান ক্ষেতের ধান ৩ থেকে ৪ ফুট উ”ু। লাইজুর স্বামী মিন্টু মোল্ল¬¬া ইদ্রিস হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন ভাবে গ্রেফতার হয়ে হাজত বাস করছে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে লাইজু বেগম পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। লাইজুর প্রেমের টানে তার পরকিয়া প্রেমিক গভীর রাতে তাদের বাড়িতে আসত। এ ঘটনা মিনু বেগম দেখে ফেলে এলাকাবাসির কাছে বিচার দিয়েছিল। ফারুক বলেন, এলাকাবাসির ধারণা লাইজু বেগমের পরকিয়া প্রেমিক  ৪ নভেম্বর রাতে লাইজুর ঘরে এসেছিল আর এ ঘটনা দেখে ফেলে মিনু বেগম মৃত্যুর আগে ওই দিন রাত ১২ টায় তার স্বামীকে এ ঘটনা জানিয়েছে। মিনু বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে সে এলাকার কোন, কোন লোকের সাথে কথা বলত এবং কিকি কথা হত হত্যাকান্ডের ক্লু আবিস্কারে তাও উদ্ধার করা দরকার।

সংবাদ সম্মেলন মোহসীন হোসেন ফারুক এ সব বিষয় ক্ষতিয়ে দেখতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। এ ছাড়া সর্তক পর্যবেক্ষণ দ্বারা মিনু বেগম হত্যা কান্ডের সাথে জড়িতদের খুজে বের করতে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকেদের প্রতিও অনুরোধ জানান। ফারুক এ সময় দাবী করেন, পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় সাংবাদিকরা তৎপর হলে তাদের পরিবার ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পাবে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফারুকের চাচা আবু বক্কর তালুকদার, ফুপাতো ভাই মোঃ সাগর প্যাদা, বন্ধু পলাশ রায় অপু, এলাকাবাসী আব্দুল হাকিম খান প্রমুখ।