নতুন পিসি/ল্যাপটপ কেনার পর যে বিষয়গুলো প্রথমেই করা জরুরী!

(প্রিয় টেক) নতুন পিসি বা ল্যাপটপ কিনেছেন, মনে ফুরফুরে ভাব চলে এসেছে, কি ইনস্টল বা আনইনস্টল করবেন ভাবছেন? গেম পাগল যারা তারা লেগে যাবেন গেম ইনস্টল করতে আর যারা মুভি পাগল তারা ব্যস্ত হয়ে পরবেন বিভিন্ন রকম কোডেক খুঁজে বের করতে। এর সব কিছুই ঠিক আছে। কিন্তু শুরুর আগে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নেয়াটা কি জরুরী ছিল না? এখানে কয়েকটি পদক্ষেপ দেয়া হল যার মাধ্যমে আপনার পিসিটির কর্মক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন অনেকদিন, ব্যবহার করে পাবেন আনন্দ, থাকবেন দুশ্চিন্তা মুক্তও।

প্রথম ধাপ ১: উইন্ডোজ আপডেট

আপনার পিসিটি চালু করার পর প্রথম পদক্ষেপটি হবে উইন্ডোজটিকে আপডেট করে নেয়া। এর জন্য প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট সংযোগের। বাসায় যদি আগে থেকেই ইন্টারনেট সংযোগ থেকে থাকে তাহলে পিসিটিকে সংযোগ করুন এর সাথে।

ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ স্থাপনের পর স্টার্ট মেন্যু -> অল প্রোগ্রাম -> উইন্ডোজ আপডেট -> চেক ফর আপডেটে ক্লিক করুন।

আপডেট করবার সময় কয়েকবার মেশিনটি রিস্টার্ট করতে হতে পারে। রিস্টার্ট করবার পর চেক করে দেখুন সবগুলো আপডেট ঠিক মত হয়েছে কিনা। না হলে আবার আপডেট করতে দিন।

দ্বিতীয় ধাপ: আনইনস্টল করুন ক্র্যাপওয়্যারগুলোকে

বিশেষ করে ল্যাপটপগুলোতে নির্মাতারা এমন অনেক সফটওয়্যার লোড করে দেয় যেগুলো আসলে কোন প্রয়োজন পরে না, আবার কিছু কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যারা মেশিনটিকে ধীর গতি করে ফেলে। আপনার মেশিনে যদি অরিজিনাল উইন্ডোজ থাকে তাহলে পিসি নির্মাতা কর্তৃক দেয়া নরটনের ট্রায়াল সংস্করণটি মুছে দিয়ে মাইক্রোসফটের সিকিউরিটি এসেন্সিয়াল ইনস্টল করুন। এই সফটওয়্যারটি ফাস্ট এবং ফ্রি।

আপনার যদি আগে থেকেই ধারণা থাকে কোন সফটওয়্যারটি রাখতে হবে, কোনটি নয়, তাহলে ব্যবহার করুন রেভো আনইনস্টলার। এর ফ্রি এবং বেসিক সংস্করণের মাধ্যমে আনইনস্টল করতে পারবেন এমন অনেক সফটওয়্যার যা মাঝে মাঝে উইন্ডোজ আনইনস্টলার মিস করে।

তবে কোনটি ক্র্যাপওয়্যার কোনটি নয় এ ব্যাপারে যদি আপনার মনে দ্বিধা থাকে তাহলে ব্যবহার করুন পিসি ডিক্র্যাপিফায়ার। এই আনইনস্টলারটি আপনার পিসিটি চেক করে ক্র্যাপওয়্যারের একটি তালিকা তৈরি করবে। এই তালিকার কোন সফটওয়্যার রাখতে চাইলে আনসিলেক্ট করুন। অথবা আনইনস্টল করুন সবগুলো।

এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন স্লিম কম্পিউটার, এই সফটওয়্যারটি পিসি ডিক্র্যাপিফায়ার মতই কিন্তু সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে সফটওয়্যারটি তার ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ফিডব্যাক সংগ্রহের করে থাকে। আর তাই সফটওয়্যারটি অনেক সময় এই ক্র্যাপওয়্যারগুলোর মাঝে কোন ভালো সফটওয়্যার থাকলে তা রেকমেন্ড করতে পারে। এছাড়া সফটওয়্যারটিতে ক্র্যাপওয়্যারগুলো কে কি কাজ করে সে ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে থাকে।

তৃতীয় ধাপ: ড্রাইভারগুলো আপডেট করুন

ড্রাইভারগুলো আপডেটের মাধ্যমে আপনি মুক্তি পেতে নানারকম বাগ এবং পেতে পারেন ইনহ্যান্স পারফরমেন্স। বেশির ভাগ সময়ে উইন্ডোজ আপডেটের মাধ্যমেই আপনি পেতে পারেন সর্বশেষ ডিভাইস ড্রাইভারের আপডেট সমূহ।

তবে ড্রাইভার আপডেটগুলো সাধারণত অপশনাল আপডেটের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। আর তাই আপনার উচিত হবে এদিকে বিশেষ নজর রাখা এবং ম্যানুয়ালি চেক করা।

এছাড়া আপনার যদি এনভিডিয়া বা এটিআইএর গ্রাফিক্স কার্ড থাকে তাহলে এদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত লক্ষ্য রাখবেন ড্রাইভার আপডেটের জন্য, এদের অনেক আপডেট উইন্ডোজ আপডেটে আসতে অনেক সময় নিয়ে থাকে।

চতুর্থ ধাপ: এক সাথে ইনস্টল করুন সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন

নিশ্চয় আপনি ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন আপনার প্রিয় সফটওয়্যারগুলো ইনস্টল করবার জন্য। এ কাজে ব্যবহার করতে পারেন নিনাইট নামে একটি সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যারটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এর মাধ্যমে আপনি পাবেন একটি বিশাল ডাটাবেজ যেখানে তালিকা আকারে পাবেন নানা রকম ফ্রি সফটওয়্যার। এর মাঝে রয়েছে ব্রাউজার থেকে শুরু করে অ্যান্টিভাইরাস ইউটিলিটি, মিডিয়া প্লেব্যাক প্রোগ্রাম পর্যন্ত।

এই তালিকা থেকে আপনি যে সফটওয়্যারগুলো নিয়মিত ব্যবহার করতে আগ্রহী সেগুলো নির্বাচন করে দিন, তারপর বসে থেকে উপভোগ করুন ঝামেলা বিহীন ইনস্টল প্রক্রিয়া। আপনাকে আর খুঁজে খুঁজে বের করে একটা একটা করে ইনস্টল করতে হল না।

নিনাইট ৩২ এবং ৬৪ বিট উভয় সংস্করণের জন্যই পাওয়া যায়।

পঞ্চম ধাপ: আপনার পিসিটিকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন

পিসিটি এখন আপনার ব্যবহারের জন্য তৈরি। কিন্তু এর আগে শুধু দুটি কাজ সম্পাদন করলে নিশ্চিত থাকা ছাড়াও এড়াতে পারবেন ভবিষ্যতে বিশাল কোন ঝামেলাকে।

এই কাজটি আপনাকে করতে হবে মাত্র একবার, এই কাজটি সম্পাদন করবার মাধ্যমে হাতে পাবেন একটি অত্যাশ্চর্য রিসেট বাটন। এর জন্য প্রয়োজন হবে একটি সফটওয়্যার। ম্যাক্রিয়াম রিফ্লেক্ট ফ্রি এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে আপনার হার্ড-ড্রাইভটির একটি ব্যাকআপ তৈরি করে সেভ করুন অন্য কোন মাধ্যমে। কখনো যদি কোন বিপদ ঘটে এর মাধ্যমে রিস্টোর করতে পারবেন আপনার উইন্ডোজ এবং সফটওয়্যারগুলোকে।

এর সাথে সাথে আপনার উইন্ডোজ সেভেনের ব্যাকআপ এবং রিস্টোর ফিচারটিও চালু রাখুন। এর জন্য কন্ট্রোল প্যানেল থেকে ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর সিলেক্ট করুন। ইচ্ছে করলে অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন বেসিক সেটিংগুলোকেও।

এইতো তৈরি আপনার পিসিটি।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে পিসিওয়ার্ল্ডের সাহায্য নেয়া হয়েছে

{jathumbnail off}