এ সম্মান অনুপ্রেরণার: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রি গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সম্মান অনুপ্রেরণা ও উৎসাহের। বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম সমাবর্তনে ভারতের উপ রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ হামিদ আনসারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই সনদ তুলে দেন।

রাষ্ট্র পরিচালনা, দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং শান্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতার স্বীকৃতি হিসেবে শেখ হাসিনাকে এ ডিগ্রি দিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। ১৯৮৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম কোনো বিদেশি সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে এই সম্মাননা দেওয়া হল।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে একটি মানপত্র পাঠ করেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অমিয় কুমার বাগচি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সেবায় তাকে আরো নিবেদিত হতে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগাবে এই সম্মান।

শেখ হাসিনা বলেন, “জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সব মানুষের সমানাধিকার এবং অসা¤প্রদায়িকতার শিক্ষা আমি আমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর এই শিক্ষা আমার মনে গভীরভাবে গেঁথে রয়েছে এবং আমার সরকারও এ ধারণায় বিশ্বাসী।”

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৬তম অধিবেশনে তার উপস্থাপিত শান্তি মডেলের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রকৃত উন্নয়ন আন্তঃসম্পর্কীয় কয়েকটি উপাদানের ওপর নির্ভর করে। এগুলো হচ্ছে, দারিদ্র বিমোচন এবং বৈষম্য ও বঞ্চনা হ্রাস, সুবিধা বঞ্চিতদের সমাজের মূলধারায় আনা, মানব সম্পদে উন্নয়ন জোরদার এবং সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন।”

এ সময় তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা ও সমর্থন দেওয়ার জন্য ত্রিপুরার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গত সন্ধ্যায় আগরতলা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সংগ্রামে আপনাদের বিশাল অবদানের কথা স্মরণ করে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি।”

“আমাদের দেশের অসহায় মানুষ যখন সব কিছু হারিয়ে কেবল জীবন নিয়ে স্রোতের মতো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসছিল তখন আপনারা দুই বাহু প্রসারিত করে তাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। সেই ভয়াবহ দিনগুলোর স্মৃতি এবং আমাদের জনগণের প্রতি আপনাদের ভালবাসা ও সমর্থন আমাদের মনে অমলিন রয়েছে,” বলেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান।

বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ভাষা ও ঐতিহ্যের ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, “এ কারণে আমাদের দেশের মানুষ ১৯৭১ সালে আশ্রয়ের জন্য ত্রিপুরায় এসেছিল। ১৯৭১ সালে ত্রিপুরা শরণার্থীতে ভরে গিয়েছিল। সে সময় ত্রিপুরার জনসংখ্যার চেয়ে শরণার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল।”

ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিয় কুমার বাগচীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, ত্রিপুরার গভর্নর ড. ডিওয়াই পাতিল, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, ভারতের এইচ আর ডি এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিবাল ও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক অরুণোদয় সাহা বক্তব্য দেন।
এর আগে শেখ হাসিনা ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য উন্মোচন করেন।
খবর: আজকের বাংলা