গোলামদের শাস্তি পেতেই হবে

অবশেষে রাজাকারদের শিরোমনি গোলাম আযম কারাগারে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার দায়ে রাষ্ট্রের দায়েরকৃত মামলায় আদালতে হাজির হলে, বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। জামিন আবেদনের দাবি নাকচ করে কারা প্রেরণের নির্দেশে বলা হয়, রাজাকার, আলবদর, ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনী ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা করে। তাদের অত্যাচারে ১ কোটি লোক ভারতে আশ্রয় নেয়। তারা চারলাখ নারীকে ধর্ষণ করে। আর সেসব সংগঠন এইসব কাজ করেছে তাদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান হোতাই ছিলো গোলাম আযম। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়েছে আদালত। সুতরাং তাকে অধিক বয়সের অজুহাতে জামিন দেয়ার সুযোগ নেই। এরপর আদালতও তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। এ ঘটনার পর সারাদেশে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয় আদালত। এদেশে গোলাম আযম একটি ঘৃণিত ব্যক্তির নাম। যারা সরাসরি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, কিংবা স্বাধীনতার পক্ষশক্তি হিসেবে কাজ করেছে তারা সবাই এই ঘৃণিত ব্যক্তির যথার্থ শাস্তি চেয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী গোলাম আযম এদেশের জন্মলগ্ন থেকে ছিলেন না। তিনি ১৯৭৫ সনে বঙ্গবন্ধু ও তার স্ব-পরিবার ও নিকট আত্মীয়দেরকে হত্যার পর শাসক গোষ্ঠির কৌশলের মাধ্যমে এদেশে ঠাঁই নেয়। অনেকে আজ বলেন, গোলাম আযম বৃদ্ধ? দয়া করুন। কিন্তু একথা ভুললে চলবে না গোলাম আযম বাংলাদেশ বিরোধীদের নেতা। তাকে দৃষ্টান্ত মুলক সাজা দেয়া দরকার। তিনি তো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে হত্যা, লুট, ধর্ষণ থেকে রেহাই দেননি। তাই তাকে অবশ্যই তার ঘৃণিত কাজের যোগ্য সাজা দিতে হবে। তাকে কারাগারে নেয়ায় একটু হলেও স্বস্তি এসেছে এদেশের মানুষের মধ্যে। গোলাম আযমের ন্যায় অন্যান্য পশু শক্তির নেতাদের কঠিন শাস্তি দেয়া দরকার। নইলে ছোট খাট অপরাধীদের বিচার করার অধিকার এদেশের বিচার বিভাগ বা সরকারের থাকবে না। আর গোলাম আযমের মতো অমানুষকে কখনোই মানুষ মনে করা ঠিক হবে না। এরা এদেশের মানুষকে পশুর মত হত্যা করেছে। অগ্নিসংযোগ লুট, ধর্ষণ করেছে। কাজেই কোন অযুহাতেই এদের বিচার এড়িয়ে যাওয়ার পথ নেই। শাস্তি গোলামদের পেতেই হবে।