গোলাম আযম ছিলো মানবতাবিরোধী মাস্টার মাইন্ড -হারিছুর রহমান

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের তৎকালীন গৌরনদী (বর্তমান গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া) থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম ইদ্রিস মিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র, গৌরনদী পৌরসভার মেয়র ও গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ গৌরনদী ডট কম -এর সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে বলেছেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মাস্টার মাইন্ড ছিলো জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম। দেশবাসী আজ এ ঘৃন্য ও জঘন্যতম ব্যক্তির ফাঁসির দাবি করছেন। ঘৃনতম গোলাম আযম সম্পর্কে তিনি কিছু তথ্য দিয়ে জানান, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জে (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পত্রে) মোট ৬২টি অভিযোগ পুনর্দাখিল করা হয়েছিলো। গত ৯ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ফরমাল চার্জ আমলে নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি তাকে (গোলাম আযমকে) ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। ৬২টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হানাদার বাহিনীকে সহায়তা ও তাদের সাথে চক্রান্ত করার জন্য ৬টি, তাদের সাথে পরিকল্পনার ৩টি, উস্কানি দেয়ার ২৮টি, তাদের সাথে সম্পৃক্ততার ২৪টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা ও নির্যাতনের ১ টি অভিযোগ। এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ৫২ দফা অভিযোগ উত্থাপন করে গোলাম আযমকে গ্রেফতারের আবেদন জানিয়েছিলো ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। তবে ২৬ ডিসেম্বর শুনানির পর আদালত জানায়, অভিযোগের প্রতিবেদনটি নিয়ম অনুযায়ী করা হয়নি। পরবর্তীতে ফরমাল চার্জ করে তা দখিল করা হয়। প্রথম দফায় গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দেয়া ৩৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে সাক্ষী রাখা হয় ৪০ জন। নথিপত্র ছিল ৪’শ টির মতো। এবার ৬২টি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। হানাদার বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে সব নির্যাতনের যৌথ এবং একক কর্মকান্ডের দায়ভার গোলাম আযমের। বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযম ১৯৭১ সনে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন, যাদের সহযোগীতা নিয়ে পাকিস্তানী সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযম সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও প্রকাশ্যে তদ্বির চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক গোলাম আযম মাস্টার মাইন্ড হিসেবে কাজ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, ধর্মান্তরিত করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের নির্দেশদাতা ছিলেন। তিনি নিজেও যেমন করেছেন, তেমনি পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সাথে থেকেও তার নির্দেশে তা করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ বাঙালীকে হত্যায় গোলাম আযম পিস কমিটি, রাজাকার বাহিনী ও আলবদর বাহিনী গঠন করেছিলেন। গোলাম আযম ছিলেন সেই সময়ের পিস কমিটির কেন্দ্রী প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির। ৩০ লাখ বাঙালীকে হত্যা, সাড়ে চার লাখ নারী ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ সব মানবতাবিরোধী অপরাধের নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আযম। গোলাম আযম মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মবাড়িয়া, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ঢাকা, গাইবান্ধায় রাজাকার বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাসহ বাঙালীদের হত্যা করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের ৩ (২) ধারার যত অপরাধ আছে সবই তিনি করেছেন। ১৯৭১ সনে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন, যাদের সহযোগীতা নিয়ে পাকিস্তানী সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযম সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রকাশ্যে তদ্বির চালায়। ১৯৭১ থেকে ৭ বছর লন্ডনে অবস্থান করার পর ১৯৭৮ সনে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে আবার গোলাম আযম বাংলাদেশে আসে।