উজিরপুরে সংখ্যালঘুর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা – দফায় দফায় হামলা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন আহত – দুটি বসত ঘরে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পশ্চিম সাতলা গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক দিনমজুরের সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফা হামলা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ উভয়গ্র“পের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন দুটি বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী, আহত ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নবকুমার বিশ্বাসের পুত্র শান্ত বিশ্বাসের পৈত্রিক সম্পত্তি একই গ্রামের প্রভাবশালী খালেক বিশ্বাসের পুত্র ইউনুস ও জামাল গংরা অবৈধভাবে দখল করার জন্য দীর্ঘদিন থেকে নানামুখী ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে প্রভাবশালী ইউনুস ও জামালের নেতৃত্বে তাদের ৩০/৪০ জন সহযোগীরা শান্ত বিশ্বাসের পৈত্রিক সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করতে যায়। এসময় শান্ত বিশ্বাস তাদের বাঁধা দিলে প্রভাবশালীরা শান্তকে বেধরক পিটিয়ে  গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় তোতা বিশ্বাসের পুত্র আবুল বিশ্বাস গংরা প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালী জামাল ও ইউনুসের উপস্থিতিতে তাদের সহযোগীরা আবুল বিশ্বাসকে গতকাল বুধবার সকালে উপর্যপুরি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এতে এলাকাবাসি ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে এলাকার অর্ধশত গ্রামবাসী প্রভাবশালী জামাল বিশ্বাস, ইউনুস বিশ্বাস ও তাদের লোকজনদের ধাওয়া করে। গ্রামবাসীদের তোপের মুখে প্রভাবশালীরা পিছু হটে। এসময় উত্তেজিত গ্রামবাসী ভূমিদস্যু জামাল ও ইউনুসের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহুর্তের মধ্যে জামাল ও ইউনুসের বসত ঘর আগুনে পুরে ছাই হয়ে যায়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত খাদিজা বেগম, আবুল বিশ্বাস, তাসলিমা বেগম, সোহান বিশ্বাস ও শান্ত বিশ্বাসকে উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জামাল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, তার ঘরের মূল্যবান মালামাল, স্বর্নালংকার, নগদ টাকা প্রতিপক্ষের লোকজনে লুটপাট করে নিয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে  দিয়েছে। জামালের অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় জুলহাস বিশ্বাস বলেন, জামাল ও ইউনুস বিশ্বাস নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে তারা নিজেদের ঘরে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক মোল্লা ও গ্রাম পুলিশ নিখিল হালদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে না আনলে এখানে আরো বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে যেতো। এ ব্যাপারে হারতা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আবু তালেবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই সংঙ্গীয়  ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি। ততক্ষনে বসত ঘর দুটি পুরে ছাঁই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় উজিরপুর থানায় উভয়পক্ষ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।