মহাকবি মধুসূদন জাতীয় পদক পেলেন ড. তপন বাগচী

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও যশোর জেলা প্রশাসন প্রবর্তিত ‘মহাকবি মধুসূদন জাতীয় পদক- ২০১১ পেলেন মাদারীপুরের কবি-প্রাবন্ধিক এবং বাংলা একাডেমীর উপ-পরিচালক ড. তপন বাগচী। বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে যাত্রাগান : জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত’ গ্রন্থের জন্য তাঁকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কারে অর্থমূল্য ৫০ হাজার টাকা, ১ ভরি ওজনের স্বর্ণপদক ও ক্রেস্ট।

যশোরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ খবর জানা গেছে। যশোরের সাদরদাঁড়িতে মধুমেলার সমাপনী মঞ্চে আগামি ২৭ জানুয়ারি এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। তপন বাগচীর আগে জাতীয় পর্যায়ের এই পুরস্কার লাভ করেন ২০১০ সনে ‘বাংলা লোকসাহিত্য : সমাজ ও সংস্কৃতি’ গ্রন্থের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক; ২০০৯ সনে ‘ভাঙ্গা দালানের স্বরলিপি’ গ্রন্থের জন্য নজরুল ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন ও ‘বাংলাদেশের উপন্যাসে ভূমি ও মানুষ’ গ্রন্থের জন্য ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সচিব ড. গাজী সাইফুজ্জামান এবং ২০০৮ সনে ‘বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ’ গ্রন্থের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।

এবারের পদকপ্রাপ্ত গবেষক ড. তপন বাগচী মাদারীপুর জেলার বাহাদুরপুর গ্রামে ১৯৬৮ সনে জন্মগ্রহন করেন। কদমবাড়ী উচ্চবিদ্যালয় ও ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের পাঠ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে পিএইচডি উপাধী নিয়ে তিনি সাংবাদিকতা, জনসংযোগ ও গবেষণা পেশায় যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে (পিআইবি) কাজ করেছেন। দৈনিক ‘আজকের কাগজ’, দৈনিক ‘আমাদের সময়’, ‘সাপ্তাহিক ২০০০’, ‘একুশে টেলিভিশন’ ও দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় তিনি সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন। বর্তমানে বাংলা একাডেমীর সংকলন উপ-বিভাগের উপ-পরিচালক। ‘নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার’ (কলকাতা), মুনীর চৌধুরীর সাহিত্য পুরস্কার, নাট্যসম্রাট অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতিপদক, জেমকন সাহিত্য পুরস্কার, মহাদিগন্ত সাহিত্য পুরস্কার (কলকাতা), এম নূরুল কাদের শিশু সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন। বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার ৪টি গ্রন্থ। এগুলো হলো ‘শ্মশানেই শুনি শঙ্খধ্বনি’ (১৯৯৬), ‘রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল¬াহ’ (১৯৯৮), ‘বিপ¬ব দাস’ (২০০০) এবং ‘বাংলাদেশের যাত্রাগান : জনমাধ্যম ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত’ (২০০৭)। এছাড়া ‘কেতকীর প্রতি পক্ষপাত’, ‘শ্মশানেই শুনি শঙ্খধ্বনি’, ‘অন্তহীন ক্ষতের গভীরে’ এবং ‘সকল নদীর নাম গঙ্গা ছিল’, ‘নজরুলের কবিতায় শব্দালঙ্কার’, ‘লোকসংস্কৃতির কতিপয় পাঠ’, ‘সাহিত্যের সাম্প্রতিক পাঠ’, ‘সাহিত্যের সঙ্গ অনুষঙ্গ’, ‘কিছু স্মৃতি কিছু ধৃতি’, ‘রবীন্দ্রসাহিত্যে নতুন প্রেক্ষণ’, ‘সাহিত্যের মধ্যমাঠ থেকে’ তাঁর উলে¬খযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ড. তপন বাগচী এই পুরস্কারের জন্য যশোর জেলা প্রশাসক এবং বিচারক মন্ডলীর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ইসলামী বিশ্বাবিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আবুল আহাসান চৌধুরী এবং সহ-তত্ত্বাবধায়ক যশোরের গৌরব প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান স্যারের প্রতিও তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।