বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ পেতে চায় ভূটান

তথ্য ও প্রযুক্তি সংবাদদাতা ॥ বাংলাদেশের কাছ থেকে সহজেই ব্যান্ডউইথ পেতে সম্প্রতি লিখিত আবেদন জানিয়েছে ভূটান সরকার। গত সপ্তাহে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের কাছে এ চিঠি পাঠায় তারা। চিঠিতে তারা এখনই অন্তত দশ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ নেবে বলে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি বোস এমন আবেদন আসার বিষয়টি স্বীকার করে প্রিয়.কমকে বলেন, আমাদের দিক থেকেও তাদের চিঠির জবাব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে চায় বলে আগ্রহের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা হবে। তবে এতো সহজে ভূটান ব্যান্ডউইথ পেতে পারে কিনা সেটিও বিবেচনার বিষয় রয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভূটানের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যান্ডউইথ আমদানির বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান। তার প্রেক্ষিতেই এ আবেদন এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সুনীল কান্তি বোস বলেন, ভুটানে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির আগে অবশ্যই ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা করতে হবে। তাছাড়া ভারতের পূর্বদিকের আটটি প্রদেশও যেহেতু আগে থেকে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ পেতে চায় সেক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের সুরাহ একই সঙ্গে করা যেতে পারে।

জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ভারত আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ডসহ পূর্ব দিকের আটটি রাজ্যে কম খরচের ব্যান্ডউইথ পেতে বাংলাদেশের সাবমেরিন কেবল কোম্পানির (বিএসসিসিএল) কাছে আবেদন করে। সেলক্ষ্যে ত্রিপুরার সরকারও বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। আবার বাংলাদেশেও কুমিল্লা এবং রংপুর দিয়ে দুটি লিংকের মাধ্যমে ওই রাজ্যগুলোয় ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু নানা কারণে সেসব কাজ আর এগুয়নি। তবে এবার আগামী মার্চের শুরুতে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে টেলিযোগযোগ সচিবের নেতৃত্বের একটি প্রতিনিধি দল ভারতের পূর্বদিকের রাজ্যগুলো সফরে যাচ্ছে। তখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। তাছাড়া ব্যান্ডউইথ রপ্তানির জন্যে ইতিমধ্যে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয় পরারাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কাছে অনুমোদনও চেয়েছে। সুনীল কান্তি বোস জানান, ভারতের বিষয়টি সুরাহ হয়ে গেলে একই সঙ্গে ভুটানেও ব্যান্ডউইথ দেওয়া সম্ভব হবে। এরপর নেপালের বিষয়েও চিন্তা করার সুযোগ তৈরী হবে।

সংশিষ্টরা জানান, বর্তমানে বিএসসিসিএলের ৪৪ দশমিক ৬ গিগাবাইটের মধ্যে মাত্র ২৩ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ দেশের মধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ গিগাবাইট ব্যন্ডউইথের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও একই সঙ্গে বিসিএসসিসিএলের ব্যান্ডউইথের ক্ষমতা ১৬০ গিগাবাইট পর্যন্ত নেওয়ার কার্যত্রক্রম চলছে। জুনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। তখন অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ সহজেই রপ্তানি করা যাবে। তাছাড়া দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ নিতে ইতিমধ্যে বিএসসিসিএল সিম-উই-৫ এর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই সংযোগ পেলেও ব্যান্ডউইথ রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বিএসসিসিএলের অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে বলে জানা সুনীল কান্তি বোস। এর আগে বিএসসিসিএল কয়েকবার ব্যান্ডউইথ রপ্তানির দরপত্র আহবান করে বিজ্ঞাপন দিলেও শেষ পর্যন্ত রপ্তানি করতে পারেনি। তবে এবার সব সম্ভব হতে পারে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বিএসসিসিএলের ব্যবস্থপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন।