বাইসাইকেলে দোকানদারি

ঝিনাইদহ জেলার শৌলকুপা উপজেলার ভাটিবাজার গ্রামের মৃত নিলু তালুকদারের পুত্র আজিম তালুকদার (১৭)। ৭ বছর পূর্বে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় তার পিতা মারা যায়। সে সময় আজিম পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র। পিতার মৃত্যুর পর ৭ সদস্যর পরিবারের অভিভাবক হিসেবে সকল দায়িত্ব ভার পরে তার কাঁধে। বাধ্য হয়ে পড়াশুনা বন্ধ করে আজিম নেমে পরে জিবিকার তাগিদে। প্রথমে নিজ এলাকার দিনমজুরের কাজ শুরু করে। কিশোর বলে আজিমকে অধিকাংশ চাষীরাই কামলা নিতে চায়না। উপায়অন্তুর না পেয়ে ৪ বছর পূর্বে প্রতিবেশী আসাদুজ্জামানের পরামর্শে আজিম চলে আসে বরিশালের গৌরনদীতে।

আজিম জানায়, পৈত্রিক জমি বিক্রি করে একটি বাইসাইকেল ক্রয় করে গৌরনদীর বিভিন্ন হাট-বাজার ও জনপদে বাইসাইকেলে সে হরেক রকম মালামালের পসরা সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেন। তার বাইসাইকলের পসরায় রয়েছে থরে থরে সাজানো চিরুনি, আয়না, চুড়ি, মানিব্যাগ, ভোমর, কাচি, স্ক্রু ড্রাইভার, সুঁই, পেপার ক্লিপ, চাবির রিংসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহারিক জিনিসপত্র। এসব বিক্রি করেই জিবিকা নির্বাহ করছে আজিম। সে আরো জানায়, গৌরনদীর টরকী বন্দর থেকে হরেকরকম এসব মালামাল ক্রয়ের পর গড়ে প্রতিদিন তিন থেকে চার’শ টাকা বিক্রি করছে। মালামাল কেনার খরচ-খরচা বাদ দিয়ে গড়ে প্রতিদিন তার দেড় থেকে দুই’শ টাকা উপার্জন হয়। উপার্জিত অর্থ পনেরদিন পর পর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আজিমের উপার্জিত অর্থ দিয়ে পুরো পরিবারের জিবিকা নির্বাহসহ চলে তার দু’ভাই ও এক বোনে পড়ালেখা। গৌরনদীর কটকস্থল গ্রামের ইদ্রিস শাহর একটি পরিত্যক্ত ঘরে আজিম ও তার প্রতিবেশী আসাদুজ্জামান থাকেন।