যৌন হয়রানির মামলা করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবার

আগৈলঝাড়া সংবাদদাতা ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়ের করে বিপাকে পরেছেন তার পরিবার। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা উত্তোলনের জন্য বাদি ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলা উত্তোলন করা না হলে ওই ছাত্রীর ছোট ভাইকে অপহরণ করাও হুমকি দেয়া হয়। প্রভাবশালীদের অব্যাহত হুমকির মুখে মাদ্রাসা ছাত্রী ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গত এক সপ্তাহ ধরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের নিজাম উদ্দিন মিয়ার কন্যা ও খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে যৌণ হয়রানী করে আসছে একেই এলাকার প্রভাবশালী মজিবর মিয়ার বখাটে পুত্র ইউসুফ মিয়া (১৮)। সম্প্রতি ওই ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটে ইউসুফ তার গতিরোধ করে বোরকা ও ওড়না কেটে নিয়েছিল। এ ঘটনায় এলাকায় কয়েকবার শালিশ বৈঠক বসলেও ইউসুফের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার কোন মীমাংসা হয়নি। ইউসুফ ও তার পিতা মজিবর রহমান স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতার আত্মীয় হওয়ায় ইউসুফের বিচার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা নিজাম উদ্দিন গত ৫ জানুয়ারি আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। এতে বখাটে ইউসুফ আরো ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে ছাত্রীর পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ হুমকি প্রদর্শন করা হয়। উপায়অন্তুর না পেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পরে বখাটে ইউসুফ ওই ছাত্রীর ছোট ভাই ইসরাফিলকে অপহরন করে হত্যার হুমকি দেয়। এতে ভয়ে ও আতংকে ওই ছাত্রীর পরিবার এলাকা ছেড়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ অজ্ঞাত কারনে আসামিদের গ্রেফতার করছেনা। এ ঘটনায় গত ১৬ জানুয়ারি বরিশাল জেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার আফরোজা ও পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম সরেজমিন পরিদর্শন করে ছাত্রী, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের সাথে কথা বলে যৌণ হয়রানীর ঘটনার সত্যতা পান। ওই মাদ্রাসার সুপার আঃ হাকিম ঘটনার সত্যতা শিকার করে সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ আসামি ধরতে আসার পুর্বেই আসামিরা জেনে যায়। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই ইদ্রিস আলী বলেন, আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করতে পারছিনা। গ্রেফতারের জন্য পুলিশের জোর প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে।