প্রতিবাদ করায় সাংবাদিকরা লাঞ্ছিত – ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন যোগাযোগ মন্ত্রী

মাহ্ফুজ ইসলাম শিপ্লু, দাউদকান্দি ॥ যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের আজ বৃহস্পতিবার মেঘনা নদীতে ৬টি ফেরী উদ্বোধন করে দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু পরিদর্শনে আসার খবর পেয়ে দাউদকান্দির স্থানীয় সাংবাদিকরা টোল প্লাজায় সমাবেত হয়। এ সময় দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় ওভারলোড কন্ট্রোল মেশিন দিয়ে অতিরিক্ত মাল বোঝাই (ঢাকা-মেট্রো-ট-১৪-৪৫১৬) ঢাকাগামী ট্রাক ৬ চাকার গাড়ী ১৫ টন নেওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত ১০ টন হওয়ায় ট্রাকটি  দায়িত্বরত উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন মঈন, হিসাব রক্ষন কর্মকর্ত মাহবুবুর ও পিয়ন লুৎফর রহমান ট্রাকটি আটক করে গাড়ীর কাগজপত্র জব্দ করে। পরে পিয়ন লুৎফর রহমানের মাধ্যমে ট্রাক চালক সালামের সঙ্গে ৬শ টাকা ঘুষ নেওয়ার রফা দফা করে গাড়ীটি ব্রীজ দিয়ে চলে যাওয়ার অনুমতি দেয়। এ সময়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের ঘটনাটি নজরে আসলে সাংবাদিকরা হাইওয়ে পুলিশের এস.আই মামুনের সহযোগীতায় ওই ট্রাকটি গতিরোধ করে চালক সহ ট্রাকটি  টোল প্লাজায় নিয়ে আসে। ট্রাক চালকে সাংবাদিকরা ট্রাকের অতিরিক্ত মাল সহ সেতু পার হওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে সে জানায় আমি ওভারলোড কন্ট্রেলের দায়িত্বরত পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন মঈন  অতিরিক্ত মাল বোঝাইয়ের জন্য আমাকে আটক করে। আমি দায়ীত্বরত কর্মকর্তাদের ৬শ টাকা ঘুষ দিয়ে সেতু পারাপারের অনুমতি নেই। সংশ্লিষ্ট চালক সহ সাংবাদিকরা দায়ীত্বরত ব্যক্তিদের ঘুষ নিয়ে অনুমতি প্রদানের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে তারা বিষয়টি অস্বীকার করে।

এদিকে ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল নাছেরকে অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌছে ওই ট্রাক চালক সালামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা পান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেনি, কিন্তু তার উপস্থিতিতে দায়ীত্বরত কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন মঈন, মাহাবুবুর রহমান, পিয়ন লুৎফর রহমান এর বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার ব্যাবস্থা গ্রহন না করে টোল আদায়কারী কর্মকর্তা এম.এ মতিন চালক ছালামকে ঘুষ দেয়ার অপরাধে  আটক করে ছবি তুলতে চাইলে সাংবাদিকরা বাধা দিতে গেলে এক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট টোল প্লাজায় দায়ীত্বরত উপজেলা প্রশাসন ও টোল প্লাজার সহকারী হিসাব রক্ষক এম.এ.মতিন সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাকাটির থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে জাতীয় দৈনিকের বেশ কয়েকজন  স্থানীয় প্রতিনিধি, জনকন্ঠের শামীম রায়হান, সমকালের রাশেদুল ইসলাম লিপু, ভোরের কাগজের লিটন সরকার বাদল, মানবজমিনের আরিফুল ইসলাম দিপু, বাংলাদেশ সময়ের এম.এ. সালাম, জনতার সেলিম আহমেদ, দিনকালের শরীফ প্রধান লাঞ্ছিত হয়। পরক্ষনে যোগাযোগ মন্ত্রী ঘটনাস্থল দিয়ে কুমিল্লা যাওয়ার পথে সাংবাদিকরা উল্লেখিত দায়ীত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মন্ত্রীকে ঘটনাটি অবহিত করেন। যোগাযোগমন্ত্রী ঘটনাটি আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল নাছেরকে ওই ঘুষখোর ৩ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেষ দেন।

উল্লেখ্য ওভালোড কন্ট্রোল মেশিন বসানোর পর থেকে দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্য চললেও প্রশাসনকে জানিয়ে কোন সুফল পাওয়া যায়নি।