শেবাচিমে সকল ঔষধ ও সার্জিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টে আলাদা সরকারী সম্পদ লেখা স্টিকার লাগানো হয়েছে

উম্মে রুমান, বরিশাল ॥ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ঔষধ ও সার্জিক্যাল ইন্টুমেন্ট বাহিরে বিক্রি বা চুরি’র হাত থেকে বাচাতে নতুন পদ্ধতি চালু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি ঔষধ ও ইন্টুমেন্ট লাগানো হয়েছে আলাদা করে সর্তকতা মুলক বড় অক্ষরে সরকারী সিল। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ উদ্যেগটি বাঞ্চাল করতে উঠে পরে লেগেছে চোর চক্র। পাশাপাশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ ভাবে সরকারী ঔষধ বিক্রেতা দোকানীরা।

সূত্র মতে, প্রতি বছর শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার ঔষধ ও সার্জিক্যাল ইনস্টিমেন্ট ক্রয় করে থাকে। কিন্তু এর প্রায় ১০ থেকে ২০ ভাগ ঔষধ চুরি হয়ে বাহিরের দোকানে বেচা বিক্রি হয়ে থাকে। এর প্রধান কারন হিসেবে দেখা গেছে ঔষধের প্যাকেটে সরকারী সম্পদ কিংবা ক্রয়-বিক্রয় আইনগত দন্ডনীয় অপরাধ কথাটি লেখা নেই। ফলে বিক্রেতার ক্রেতাকে যে ঔষধই ধরিয়ে দেওক না কেন ক্রতা তা গ্রহন করে থাকেন। পাশাপাশি হাসপাতালে অপারেশনের সকল ধরনের ঔষধ বা সার্জিক্যাল ইনস্টুমেন্ট থাকলেও থিয়েটারের কতিপয় চিকিৎসক কিংবা ইনচার্য আথবা ওটি বয় রোগীর স্বজনদের দিয়ে বাহির থেকে ঔষধ কিনিয়ে আনে। কিন্তু রোগীর অপারেশন হয় ওই সরকারী ঔষধ ও সাজিক্যাল ইস্টুমেন্ট দিয়ে। একই সাথে রোগীর যে পরিমানে ঔষধের প্রয়োজন হয় তার চেয়ে বেশী ঔষধ স্টোর থেকে ইন্ডেন করে থাকেন কতিপয় নার্স। আর পরে অবশিস্ট ঔষধ বাহিরের বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় চোর আর বাহিরে বিক্রি হওয়া থেকে বাচাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিট ঔষধ ও ইনস্টুমেন্টের গায়ে আলাদা করে সর্তকতা মুলক বড় অক্ষরে সরকারী সিল ও স্টিকার। তবে স্টিকার এমন ভাবে লাগানো হয়েছে যা সহজেই উঠানো সম্ভব নয়। চলতি মাস থেকে রোগীদের মাঝে এ সর্তকতা মুলক স্টিকার সম্ভলিত ঔষধ বিতরন করা হচ্ছে। তাই ইদানিং বাহিরের দোকান গুলোতে সরকারী ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে এ ব্যাপারে স্টোর অফিসার ডাঃ আব্দুর রশীদ জানান, প্রতিটি ঔষধের গায়ে স্টিকার লগানোর নিয়োম চালু হওয়ার পর ঔষধের সঠিক ব্যাবহার হচ্ছে। অন্তত এই এক সম্পাহে ঔষধ চুরির কোন ঘটনা শোনা যায় নি।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ উদ্যেগটি বাঞ্চাল করতে উঠে পরে লেগেছে চোর চক্র। পাশাপাশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অবৈধ ভাবে সরকারী ঔষধ বিক্রেতা দোকানীরা। তাদের দাবী ঔষধের গায়ে মোটা করে কোন কিছু লেখা সম্ভলিত স্টিকার লাগানো ঠিক নয়।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মুঃ কামরুল হাসান সেলিম প্রায়  অপারেশনের জন্য  হাসপাতালে প্রযাপ্ত পরিমানে ঔষধ ও সাজিক্যাল ইস্টুমেন্ট সরবরাহ রয়েছে। তিনি বলেন চিকিৎসকরা কিংবা কেউ যদি রোগীকে বলে বাহির থেকে ঔষধ কিনে আনতে সে ক্ষেত্রে রোগীযেন নিশ্চিত হন তার হাতে ধরিয়ে দেয়া ঔষধের লিস্ট’র মধ্যে কোন ঔষধটি হাসপাতালে পাওয়া যায়।

এদিকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে বিদায় নিলেন ডাঃ আব্দুর রশীদ, গাইনী বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’র হাতে নবজাতকদের জন্ম সনদ তুলে দিয়ে সরকারী চাকুরী জীবনের সবশেষ সমাজসেবা মুলক কাজ করে বিদায় নিলেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আব্দুর রশীদ। এ সমাজ সেবা মুলক কাজটির জন্য তিনি একদিন সময় অতিবাহিত করেছেন বরিশালে।

গতকাল সকালে হাসপাতালের বিদায়ী পরিচালক ডাঃ আব্দুর রশীদ গাইনী বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ হাওয়া আক্তার জাহানের হাতে  নবজাতকদের জন্ম সনদ তুলে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মুঃ কামরুল হাসান সেলিমসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা। গত ৮ ফেব্র“য়ারী ছিল পরিচালক ডাঃ আব্দুর রশীদ’র সরকারী কর্মদিবসের শেষ দিন। ওই দিন ব্যস্ততার কারনে তিনি গতকাল এ সমাজ সেবা মুলক কাজের জন্য বরিশালে থেকে যান। তিনি বাকী জীবনে তার জন্মভূমি ভোলার দৌলতখানস্থ নিজ গ্রামের গরীব দুঃখিদের সেবা করে যাবেন বলে তিনি অঙ্গিকার করেছেন।

এদিকে মন্ত্রনালয় হাসপাতালে নতুন পরিচালক নিয়োগ দেয়া না পর্যন্ত তার দায়িত্ব পালন করবেন উপ-পরিচালক ডাঃ অনিল চন্দ্র দত্ত।

উল্লেখ্য মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় দুই বছর সরকারী চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি হলে ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর ডাঃ আব্দুর রশীদ’র শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। গত ৮ ফেব্র“য়ারী ছিল তার শেষ কর্মদিবস। ১৯৭৮ সাল থেকে তার সরকারী চাকুরী জীবনের শুরু।