১২ মার্চের জন্য স্থান চেয়েছে বিএনপি সরকার টালবাহানা করছে অভিযোগ রিজভীর
খোন্দকার কাওছার হোসেন ॥ মানিক মিয়া এভিনিউ, পল্টন ময়দান, অথবা নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আগামী ১২ মার্চ মহাসমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে বিএনপি একথা জানিয়ে দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করেছেন, স্থান বরাদ্দ নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সিনিয়র সহ সভাপতি মুনীর হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, যুবদলের সাবেক নেতা কাইয়ুম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, আগামী ১২ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ওই কর্মসূচির জন্য বিএনপি তিনটি জায়গার জন্য আবেদন করেছে। এগুলো হল- মানিক মিয়া এভিনিউ, পল্টন ময়দান ও নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক। কিন্তু সরকার এখনো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না দিয়ে টালবাহানা করছে। সরকার চায় না, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করুক। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অনুমতি দিয়ে মহাসমাবেশ সফল করতে সহযোগিতা করবে।
সর্বশেষ ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে জনসভা করেছিল বিএনপি। এরপর দলটি আরো কয়েকবার ওই মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চাইলেও পায়নি। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ও দীর্ঘদিন বিএনপির কোনো জনসভা হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায়ই বিএনপির অধিকাংশ বড় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মহান ভাষা দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গেলে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে নির্যাতন চালিয়ে বিএনপিকর্মী হারুনকে হত্যার অভিযোগ তুলে এর তীব্র নিন্দা জানান তিনি। এছাড়া নেত্রকোনার আটপাড়া ও কলমাকান্দায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনেরও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এতে প্রমাণ হয়, সরকার বিরোধী দলকে বিশেষ ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচিও পালন করতে দিচ্ছে না। তারা বিরোধী দলের সকল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে দেশে একটি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম নিখোঁজের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রও সম্প্রতি নিখোঁজ হয়েছে। মাঝে মধ্যেই বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা হারিয়ে যাচ্ছেন। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, কারো কারো লাশ মিলছে।
তিনি বলেন, এভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন, গুম করে সরকার রাজনীতিকেই স্তব্ধ করে দিতে চায়। যাতে দেশে কোনো বিরোধী দল না থাকতে পারে এবং তারা যাতে একদলীয় শাসন কায়েম করতে পারে।
রিজভী বলেন, দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চললেও সরকার নির্বিকার। বিদ্যুতের দাম ফের বাড়ানো হচ্ছে, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শিল্পকারখানা ও গার্মেন্টস, গ্যাস-পানি সঙ্কট চরমে উঠেছে। সর্বত্র দুঃসহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর নির্যাতন চালিয়ে সরকার জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে। তাই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে আগামী ১২ মার্চের মহাসমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানান।