গৌরনদীতে ভেজাল গুর তৈরি কারখানার সন্ধান লাভ

সূত্রমতে, কারখানার বাহিরে তালাবদ্ধ করে ভীতরে বসেই তৈরি করা হয় ভেজাল গুর। ৬০ কেজি চিনি, ২০ কেজি ময়দা, ১০ কেজি নষ্ট দুগর্ন্ধযুক্ত (ঝোলা) গুর ও ১০ কেজি চিটা গুর মিশিয়ে বিশাল আকৃতির কড়াইতে (স্থানীয় ভাষায় তাফাল) জ্বালিয়ে ১০০ কেজির ভেজাল গুড়ের মধ্যে ৫’শ গ্রাম বিষাক্ত ক্যামিক্যাল সালফেট মিশিয়ে বাহারি রং করে ২৫ থেকে ৩০ কেজি ওজনের পাটালি (পাটা) গুর তৈরি করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, চিনির মূল্য পাইকারী হিসেবে প্রতিকেজি ৩৮ টাকা। আর গুর প্রতিকেজি পাইকারী বিক্রি করা হয় ৪৮ টাকায়। অধিক মুনাফার আসায় শাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক দিলীপ শাহ দীর্ঘদিন থেকে দাপটের সাথে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে কারখানা থেকে ২ থেকে আড়াই’শ মন গুর গৌরনদীসহ পাশ্ববর্তী কালকিনি, বানারীপাড়া, স্বরুপকাঠী, কোটালীপাড়া, আগৈলঝাড়া, পটুয়াখালী, উজিরপুর, মুলাদীসহ দেশের বিভিন্নস্থানের পাইকারী মোকামে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। ওই কারখানায় কর্মরত গুর তৈরির কারিগর রাজশাহী সদরের কাটাখালি গ্রামের রনজিত সরকার জানান, এক’শ কেজি গুর তৈরি করতে তারা ৪৫ কেজি চিনি, ৫৫ কেজি ঝোলা গুর ও আড়াই’শ গ্রাম সালফেট ব্যবহার করছেন।
বিষাক্ত ক্যামিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুর তৈরি করা প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জয়নাল আবেদীন জনকন্ঠকে বলেন, বিষাক্ত ক্যামিক্যাল সালফেট শারিরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যা মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি জনকন্ঠকে বলেন, গৌরনদীতে ভেজাল গুরের কারখানা রয়েছে তা আমার জানা নেই। অনতিবিলম্বে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।      
ভেজাল গুর তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে শাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক দিলীপ শাহ বলেন, ময়দা ও চিটা গুর দিয়ে নয়, ঝোলা (নষ্ট) গুর শক্ত করার জন্য চিনি মেশানো হয়। এছাড়া গুরে রং হওয়ার জন্য সালফেট মেশানো হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।