কোন আভিযোগ নেই – WatchDog

কাকে দায়ী করব এর জন্যে? বাস ড্রাইভারকে? কেন? দেশীয় বাস ড্রাইভারদের জন্মের ইতিহাসে কি আমাদের জানা নেই? ওরা খেটে খাওয়া পরিবার হতে উঠে আসে। কিছুদিন হেল্পারী করার পর বসে যায় চালকের আসনে। যথাযত কর্তৃপক্ষের সাথে নগদ কিছু বিনিময়ের মাধ্যমে যোগাড় করে নেয় লাইসেন্স নামক টয়লেট পেপার। আইনের সাথে পরিচয় হল না, নিয়ম-কানুন জানতে হল না, তার আগেই সম্রাটদের ঘাতক হওয়ার লাইসেন্স তুলে দেওয়া হল এদের হাতে। যারা পয়সা খেয়ে লাইসেন্স নামক কাগজে সই করল তারা কি চাইলেই দায়িত্ব এড়াতে পারবেন? সবাই যদি সোনা রফিক বনে যায় তা হলে তো বলার কিছু থাকে না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের ‘মাননীয়’ মন্ত্রীবরও কি সোনা রফিকদের একজন নন? হাতি ঘোড়া অশ্ব ডিম্ব সহ আলিশান আয়োজনে দিন গুজার করেন যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীবর। সভা সমিতি আর নেত্রী স্তূতির তাবেদারীতেই সময় চলে গেলে কোথাকার কে, কার কাছে থেকে পয়সা খেয়ে কি সই করল এত কিছু দেখার সময় থাকবে কি করে? পয়সা যে সবাইকেই খেতে হয়। কেউ খায় লাইসেন্সে সই করে, কেউবা আন্তর্জাতিক টেন্ডারে সম্মতি দিয়ে। ৬০ মন্ত্রী, সাথে পাইক পেয়াদা, তীরন্দাজ বরকন্দাজ নিয়ে মহাসমারোহে বাস করছেন সই সমিতির মহা কর্ণধার জনাবা প্রধানমন্ত্রী। ইডেন কলেজের সামনে কোথাকার কোন সম্রাটের মগজ থেতলে গেল তাতে উনার কি? এত ক্ষুদ্র ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামালে অভাগা দেশটার হবে কি? পরিবারের কারও জন্যে ভুনা খিচুড়ি পাকিয়ে উনাকে যে অপেক্ষা করতে হয়না। কারণ এক উনি ছাড়া সবাই বিদেশ। ওখানে পয়সা খেয়ে ঘাতক তৈরীর লাইসেন্স ইস্যু হয়না। তাই প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ এবং সন্তানাদির ভাগ্য নিয়ে নিশ্চিত।

 

তারুণ্যের উদ্দামতার কাছে বিবেক, বিচার ও বুদ্ধি মার খায়, এ নিয়ে হা হুতাশ করে লাভ নেই। ছাত্র তান্ডবে আগুনের লেলিহান শিখায় প্রাণ দিয়েছে বেশ কিছু যানবাহন। কার লাভ হল? সম্রাট ঘাতকদের বিবেক কি নাড়া দিয়ে গেল? মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীদের দায়িত্ববোধ কি উথলে উঠলো? বরং উলটো এমন কিছু হল, যার ফলে লাভবান হবে সেই সোনা রফিকেরই দল। ইনস্যুরেন্স‌ কোম্পানীর বড় কর্তাদের হাতে নগদ কিছু ধরিয়ে দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা আদায় করে নেবে বাসের দ্বিগুন মূল্য। থানার দারোগা পুলিশরা হিংস্রতার অজুহাতে দায়ী ছাত্রদের অভিভাবকের পকেট হতে খসিয়ে নেবে বেশ কিছু বঙ্গবন্ধু মার্কা নোট।

গদি দখলের রাজনীতিতে আমাদের দেশ ক্লান্ত, শ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট। রাজনীতির গোলক ধাঁধায় আটকে আমরা এতটাই বিভ্রান্ত, ভুলে গেছি জনগণের স্বাভাবিক জন্ম মৃত্যুর নিশ্চয়তা দেয়ার অপর নামই রাজনীতি। রাস্তাটা কার নামে নামকরণ করা হল তার চাইতে বেশী জরুরী একই রাস্তা চলাচলের জন্যে কতটা নিরাপদ। এই সহজ সত্যটা ছাত্রদের মগজে ঢুকানো গেলে টলে উঠবে সোনা রফিকদের তখততাউস। বাসে আগুন না দিয়ে ছাত্রদের আহ্বান জানাবো এই সোনা রফিকদের পশ্চাতদেশে আগুন জ্বালাতে। কে জানে, আগুনের লেলিহান শিখা হয়ত প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত প্রাসাদ পর্যন্ত গড়াবে। সেদিন, কেবল সেদিনই সম্রাট ঘাতকদের চিরস্থায়ী কবর হবে। এর আগে নয়।

Writer: WatchDog – AmiBangladeshi.OrG