আগৈলঝাড়ায় অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রমরমা বানিজ্য – প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ জনগন

আগৈলঝাড়া সংবাদদাতা ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অবৈধভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রমরমা বানিজ্য। অনেক সময় রোগীরা ভূল রিপোর্টের কারনে পঙ্গুত্ববরণসহ অকালে জীবন হারাতে হয় অনেকের। ডাক্তারা চিকিৎসা সেবাদিতে বিভ্রান্তির সম্মুক্ষিন হতে হয়। এব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই। রোগীরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট নিয়ে পরেন বিভ্রান্তিতে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানাগেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর ও হাসপাতালের সম্মুখসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ২০টি’র অধিক ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা সরকারী নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে বছরের পর বছর অবৈধ ভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রতারিত হচ্ছে ভুক্তভোগী সাধারণ রোগীরা। আগৈলঝাড়ায় গ্রামীণ প্যাথলজী ও বিএস ম্যাটোনেটিভ হাসপাতালের সরকারী অনুমোদন ছাড়া বাকী ১৮টির কোন সরকারী অনুমোদন নেই। এর পরেও তারা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে  বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠানে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসকল প্রতিষ্ঠানে নেই কোন  প্রশিক্ষন প্রাপ্ত টেকনোলজিষ্ট। তাই রোগীদের হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। অনেক সময় রোগীরা ভূল রিপোর্টের কারনে পঙ্গুত্ববরণসহ অকালে জীবন হারাতে হয়। এ সব প্রতিষ্ঠান থেকে যে রিপোর্ট গুলো দেয়া হয় তা সরকার অনুমোদিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অভিক্ষ টেকনোলজিস্টদের রিপোর্টের সাথে মিল থাকে না। ঔসব রোগীরা রিপোর্ট নিয়ে পড়েন চরম ভোগান্তিতে। পরে বরিশাল গিয়ে তাদের পুনরায় ওই রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করতে হয়। এতে রোগীদের দু’টি স্থানে পরিক্ষা করতে দ্বিগুন টাকা খরচ হয়। হাসপাতালের ডাক্তারা বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য তাদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান। এসব পরীক্ষা থেকে ডাক্তারা ৫০-৬০% পর্যন্ত পেয়ে থাকেন। উপজেলা সদরে যে সমস্ত ডাক্তার চেম্বারে বসেন তারাও সদরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে পরীক্ষার জন্য তাদের রোগীকে পাঠান। চেম্বার শেষে ওই সব ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাদের কমিশনের টাকা নিয়ে যান। অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার জেনেও ডাক্তারা ওইসব সেন্টারে পরীক্ষার জন্য রোগীকে পাঠান।

আগৈলঝাড়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো হল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে জান্নাত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শারমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেবা মেডিকেল সার্ভিস, সন্যামাত ডায়াগনস্টিক, আগৈঝাড়া উপজেলা সদরে, গ্রামীন প্যাথলজী, লাবিব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আগৈলঝাড়া প্যাথলজি, আগৈলঝাড়া দুস্থ্য মানবতা হাসপাতাল, কাঠিরা চক্ষু ক্লিনিক, বিএম মেটারনিটি হাসপাতাল, আলোশিখা মারিয়া মাদার চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিক, পপি ডেন্টাল, কনক ডেন্টাল, আখি ডেন্টাল, সিটি ডেন্টাল, মা ডেন্টাল, হিউম্যান ডেন্টাল, কালাম ডেন্টাল, সেবা ডেন্টাল, স্ম্রার্ট ডেন্টাল গুলোতে অবৈধ ভাবে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক গুলো বরিশাল সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবছর পরিদর্শনের নিয়ম থাকলেও তারা অজ্ঞাত কারনে ৩-৪ বছর পর পরিদর্শন করেন।

এব্যাপারে উপজেলা পঃ পঃ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান উপজেলায় ২০টি ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক রয়েছে। যার মধ্যে গ্রামীণ প্যাথলজি ও বিএম মেটারনিটি হাসপাতালের সরকারী অনুমোদন রয়েছে। বাকীদের সরকারী কোন অনুমোদন নেই। তারা অবৈধভাবে এসব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।