প্রধানমন্ত্রী বরিশালে যাচ্ছেন – যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বরিশালের স্বপ্নের আধুনিক নৌ-বন্দর

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বরিশালের স্বপ্নের আধুনিক নৌ-বন্দর যাত্রী সাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। আগামি ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ফিতা কেটে বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের আধুনিক নৌ-বন্দরের দ্বার খুলে দেবেন। বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রেরিত ফ্যাক্সবার্তার মাধ্যমে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। মহাজোট সরকার গঠন করার পর এটি প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয়বারের মতো বরিশাল সফর।

সুত্রে আরো জানা গেছে, একদিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামি ২১ মার্চ বেলা ১১টায় বরিশাল আধুনিক নৌ-বন্দরের উদ্বোধন করবেন। ১৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আধুনিক নৌ-বন্দরের নির্মান কাজ ইতোমধ্যে শেষ করা হয়েছে। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১ টায় সার্কিট হাউজে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সাথে প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করবেন। সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী জেলার সকল কর্মকর্তাদের সাথে সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে সভা করবেন। বিকেলে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের আয়োজনে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ভাষন দেবেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল আধুনিক নৌ-বন্দর প্রতিষ্ঠার জন্য ১৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিনটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। এরমধ্যে এক হাজার ৫’শ ৫৪ দশমিক ২১ বর্গফুটের দ্বিতল ভবন ও প্রাচীর নির্মাণের জন্য দুই কোটি ৪৪ লক্ষ, প্লন্টুন নির্মাণের জন্য সাত কোটি ৫৫ লক্ষ, বন্দর এলাকায় খনন বাবদ তিন কোটি, জেনারেটর ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) স্থাপনে ২৫ লক্ষ এবং ৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা অন্যান্য কাজে ব্যয় করা হয়েছে। ২০১০ সনের ফেব্র“য়ারি মাসে আধুনিক নৌ-বন্দর নির্মানের দরপত্র আহ্বান করা হয়। তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নৌ-বন্দরের নির্মাণকাজ পায়। সূত্রমতে, ভবন নির্মাণের কাজ মেসার্স ছালাম এন্টারপ্রাইজ, প্লন্টুন ও গ্যাংওয়ে নির্মাণের কাজ মেসার্স বিজলী কনস্ট্রাকশন এবং সীমানা প্রাচীর, পার্কিং শেডসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কাজটি পায় মেসার্স অনুকুল চন্দ্র সরকার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সনের ৪ মার্চ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। ২০১১ সনের ৩০ জুনের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলে নানা সমস্যার কারনে ওই বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু সমস্যা থেকে যাওয়ায় আবারো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঠিকাদারদের বন্দর বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারেরা ওই সময়েও নৌ-বন্দর হস্তান্তর করেননি। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্তৃপক্ষের কাছে আধুনিক নৌ-বন্দরটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী এ.জেড.এম শাহনেওয়াজ কবির বলেন, ‘আমাদের বিকল্প কোনো নৌ-বন্দর না থাকায় একদিকে লঞ্চ নোঙ্গর ও অন্যদিকে ছোট খাটো কাজ করতে গিয়ে ভালোভাবে স্পাট বসানো সম্ভব হয়নি। সেক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে পরে ঠিকাদারেরা এগুলো ঠিক করে দিয়েছেন।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরিশালে আগমন উপলক্ষে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগসহ জেলার দশটি উপজেলার আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।