মেয়র নাইট দেখতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় দু’যুবক নিহত ॥ লাশ ছিনতাই

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের কাশিপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় টমটম যাত্রী দু’যুবক নিহত ও একজন গুরুতর আহত হয়েছে। গত শুক্রবার (৯ মার্চ) রাত নয়টায় দিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক একঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শ করেছে। পরবর্তীতে নিহতদের স্বজনেরা বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গের দরজা ভেঙ্গে নিহতদের লাশ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। নিহতরা হচ্ছে নগরীর ৩০নং ওয়ার্ড গড়িয়ারপাড় এলাকার সোনাই শরীফের পুত্র নাহিদ শরীফ (১৮) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী খানের পুত্র রবীন খান (১৭)। আহত একই এলাকার মোজাম্মেল হোসেন মিয়ার পুত্র রাকিব মিয়াকে (১৭) শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ জানায়, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত শুক্রবার রাতের ‘মেয়র নাইট-২০১২’ দেখার জন্য তারা টমটমযোগে (নসিমন) বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানের উদ্দেশ্যে আসছিলো। গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘাতক যাত্রীবাহী মেঘনা পরিবহনের বাস (ঢাকা মেট্রো-ব ১১-০৩৯২) ও চালক পান্নু হাওলাদারকে (২৮) আটক করেছে। পান্নু বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা গ্রামের সুলতান আহম্মেদের পুত্র।

স্থানীয় নাসির উদ্দিন জানান, একটি টমটমে গড়িয়ারপাড় থেকে তিনজন বন্ধু মিলে মেয়র নাইট অনুষ্ঠান দেখার জন্য রওনা হয়।  তাদের বহনকারী টমটম কাশিপুরের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বিএড কলেজ এলাকায় পৌঁছলে টমটমের চাঁকা খুলে যায়। এ সময় বিপরীতদিক থেকে আসা বরগুনা থেকে ঢাকাগামী মেঘনা পরিবহনের বাস টমটমকে চাঁপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নাহিদ মারা যায়। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা রবিনকে মৃত বলে ঘোষনা করে। মুমুর্ষ অবস্থায় রাকিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থলে থাকা নগরীর বিমান বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) আরিফুল ইসলাম বলেন, দ্রুত ঘাতক বাসটি পালিয়ে যায়। পরে গৌরনদী হাইওয়ে থানাকে অবহিত করা হলে পুলিশ বাস ও চালককে আটক করে। গৌরনদী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ সোহেল রানা বলেন, বাস ও চালককে আটক করা হয়েছে। যাত্রীদের বিকল্প পরিবহনে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ওইদিন রাত নয়টায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা নাহিদ ও রবিনের মৃত দেহ তাদের স্বজনেরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাষ্টার আজাহার আলী খান বলেন, নিহতের স্বজনরা এসে হৈ হুল্লোর শুরু করে। তারা একজন বেঁচে আছে বলে জানিয়ে জরুরী বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে খুঁজতে শুরু করে। একপর্যায়ে নিহতদের স্বজনসহ তাদের সাথে আসা শতাধিক লোকজন মর্গের দরজা ভেঙ্গে নিহত দু’জনের মৃতদেহ নিয়ে পিকআপে তোলে। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা তিনজন পুলিশ সদস্যদের বাঁধাকে উপেক্ষা করে নিহতের স্বজনেরা লাশ নিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা কোতয়ালী মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এস.আই) আইয়ুব আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতদের স্বজনেরা বিনা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহত দু’জনের লাশ মর্গের দরজা ভেঙ্গে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।