যৌতুকের বলি – মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে ১১ দিন পর পরাস্থ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গৌরনদী, ২৫ এপ্রিল ॥ যৌতুকের দাবিকৃত টাকা না পেয়ে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের অমানুষিক নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে নিজের শরীরে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলো গৃহবধূ সিমা বেগম (২৬)। অবশেষে ১১ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জানড়ে অবশেষে গতকাল বুধবার ভোররাতে মৃত্যুর কাছে পরাস্থ হয়েছে সিমা। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর সরিকল গ্রামের।

পুলিশ ও নির্যাতিত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামের মৃত এ.কে.এম গিয়াস উদ্দিন খানের কন্যা সিমা বেগমের সাথে পাশ্ববর্তী উত্তর সরিকল গ্রামের মৃত শামছুল হক বিশ্বাসের পুত্র কিসলু বিশ্বাসের ৭ বছর পূর্বে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। দাস্পত্য জীবনে তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নির্যাতিত গৃহবধূ সিমা বেগমের ভাই বিপ্লব খান জানান, তার বাবা মা মৃত্যুর পরে সে নিজেই সামাজিকভাবে বোনের বিয়ে দেন। বিয়ের সময় বোনের সুখের জন্য ধার দেনা করে বর কিসলুকে যৌতুক হিসেবে নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ প্রায় দু’লক্ষ টাকার মালামাল প্রদান করেন। অতিসম্প্রকি কিসলু ব্যবসার জন্য তার (বিপ্লবের) কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করে। এতে সিমা বাঁধ সাধায় প্রায়ই তাকে শারিরিক নির্যাতন করে। তারই ধারাবাহিকতয় গত ১২ এপ্রিল রাতে সিমাকে মারধর করে বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়। লোকলজ্জায় সিমা গত ১৫ এপ্রিল সকালে স্বামীর বাড়ির পাশ্ববর্তী বাগানের মধ্যে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বাগানের মধ্যে আগুন দেখে জমিতে কর্মরত শ্রমিকরা এগিয়ে আসে। মুমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা সিমাকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থার গৃহবধূ সিমা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গত ১১ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল বুধবার ভোররাতে সিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন। সিমার ভাই চঞ্চল হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।