উজিরপুরে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের হামলা পাল্টা হামলায় ১০ জন আহত – মুর্তি ভাংচুর

নিজস্ব সংবাদদাতা, গৌরনদী, ২৬ এপ্রিল ॥ অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরধরে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার সভা চলাকালীন সময়ে দু’গ্র“পের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এসময় একটি মন্দিরের মুর্তি ও সভার চেয়ার ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে হামলাকারীদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদক। এ নিয়ে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ি গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটায় জল্লার পানবাডি মন্দিরের সামনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাউন্সিল শুরু হয়। ওই সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খালেক আজাদ, সাধারণ সম্পাদক  জামাল হোসেন, জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উর্মিলা বাড়ৈ, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সমীর মজুমদার, সাধারন সম্পাদক আলী হায়দার নান্নু, আবু বক্কর মল্লিক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি অরুন বিশ্বাস, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমনসহ সিনিয়র নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কাউন্সিলের একপর্যায়ে বেলা বারোটার দিকে ওটরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালের ক্যাডার কতিথ ছাত্রলীগ নেতা বিশ্বজিত বাড়ৈ নান্টু, নজরুল ইসলাম বাচ্চুর নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন ক্যাডাররা কাউন্সিলস্থলে অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। এসময় সভাস্থলে উপস্থিত আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পাল্টা হামলা চালায়। এসময় উভয়গ্র“পের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বিশ্বজিত বাড়ৈ নান্টু ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উর্মিলা বাড়ৈ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম জামাল হোসেনকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তারা দৌড়ে পাশ্ববর্তী একটি ঘরে আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা পায়। এসময় হামলাকারী ছাত্রলীগ ক্যাডার বিশ্বজিত বাড়ৈ নান্টু ও তার লোকজনে প্রকাশ্যে সভাস্থলের চেয়ার ও পানবাড়ি মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর করে। হামলা ও পাল্টা হামলার একপর্যায়ে কাউন্সিল পন্ড হয়ে যায়। হামলায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ কর্মী নিমাই বিশ্বাস, আলী উজ্জামান, অসীম সরকার, সুমন সিকদারসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে উজিরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম জামাল হোসেন জানান, কাউন্সিল চলাকালীন ওটরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালের ক্যাডাররা অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে সভাস্থলসহ পাশ্ববর্তী মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করে। হামলাকারীরা কোন কিছু না বলেই হামলা চালিয়ে আমাকে ও ইউপি চেয়ারম্যান উর্মিলা বাড়ৈকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। মন্দির কমিটির সভাপতি আকুল মন্ডল জানান, হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে চেয়ার ভাংচুরের পর মন্দিরে হামলা চালিয়ে তিনটি মুর্তি ভাংচুর করেছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজুর রহমান ইকবালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দু’গ্র“পের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে তার লোকজনের ওপর প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা প্রথমে হামলা চালিয়েছে।