ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পত্তি দখল করে আ’লীগ নেতার ইটভাটা নির্মান ॥ ক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গৌরনদী, ৩০ এপ্রিল ॥ ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্ধ করা খাস সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান ইটের ভাটা নির্মান করেছে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরএককুরিয়া ইউনিয়নের দাতপুর চর এলাকার।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই এলাকার অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরএককুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মুকিম তালুকদার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একের পর তিনি সরকারি খাস জমি দখল, ভিজিএফ ও ভিজিডির মালামাল আত্মসাতসহ নানা অপকর্মের সাথে নিজেকে জড়িয়ে নেন। সম্প্রতি সময়ে তিনি (মুকিম তালুকদার) তার ইউনিয়নের দাতপুর চরে ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে জেলা প্রসাশন থেকে বরাদ্ধ দেয়া ১৫ একর খাস জমি দখল করে ইটের ভাটা নির্মান করেন। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে বাঁধা দিলে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা মুক্তিযোদ্ধাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। অভিযোগে আরো জানা গেছে, চেয়ারম্যান মকিম তালুকদার একের পর এক অপকর্ম করে আসলেও তার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্ধকৃত খাসের সম্পত্তি দখল করে ইটের ভাটা নির্মানের ব্যাপারে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জেলা প্রসাশন সহ জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অপরদিকে ওই এলাকার ভিজিএফ কার্ডধারী শাহে আলম অভিযোগ করেন, প্রতিবার তাদের ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ১২ থেকে ১৫ কেজি করে দিয়ে বাকি চাল চেয়ারম্যান ও লোকজনে আত্মসাত করে আসছেন। স্থানীয় সেলিম বেপারী, সাত্তার খান, মহসীন উদ্দিন অভিযোগ করেন, তাদের ভিজিএফ কার্ডের ৩০ কেজি গমের পরিবর্তে ১৪/১৫ কেজি করে গম দেয়া হয়। বাকিটা চেয়ারম্যানই আত্মসাত করে আসছেন।

উল্লেখিত অভিযোগ অস্বীকার করে চরএককুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মকিম তালুকদার বলেন, জমি মুক্তিযোদ্ধাদের ঠিক আছে। তবে আমি তাদের কয়েকজনের কাছ থেকে জমিটি চেয়ে নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমার সুপারিশেই সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের নামে চরের খাস জমি বরাদ্ধ দিয়েছে। তাই ১০ বছর আমি ওই জমিতে ইটভাটা চালিয়ে জমি ফিরিয়ে দেবো। ভিজিডি, ভিজিএফ চাল ও গম আত্মসাতের ব্যাপারে তিনি বলেন, ওইসব মালামাল আনতে পরিবহন খরচ, প্রকল্প কর্মকর্তা, মিডিয়ার লোকজনদের ম্যানেজ করতে হয়। এসব খরচ যোগাতেই কিছু চাল ও গম কম দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শহিদুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দাতপুর চরে চেয়ারম্যান একটা ইটভাটা নির্মান করেছে তা জানি, তবে সেটা যে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে তা আমার জানা ছিলোনা। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।