বরিশালে সুগন্ধি লাল তীর ধানের বাম্পার ফলন

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ চলতি বোরো মৌসুমে বরিশালের সর্বত্র সুগন্ধি লাল তীর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে ধানের বাজারে মূল্য কম হওয়ায় কৃষকেরা মহাদুশ্চিন্তায় ছিলেন। এরইমধ্যে গত ৩০ এপ্রিল সরকারি ভাবে ধানের ১৮ টাকা কেজি দরে মূল্য নির্ধারন করায় এতদাঞ্চলের কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। জেলার সর্বত্র এবার কৃষকেরা গুটি ইউরিয়া সার ব্যবহারের মাধ্যমে সুগন্ধি লাল তীর ধান রোপন করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর লাল তীর ধান কর্তনের পর হেক্টর প্রতি ৭ মেট্রিক টনেরও বেশি ফলন ঘোষণা করেছেন। যা গত বছরে তুলনায় অনেকগুন বেশি। মঙ্গলবার জেলার গৌরনদী উপজেলার কাছেমাবাদ ব্লকে আনুষ্ঠানিক ভাবে লাল তীর ধানের নমুনা কর্তন করা হয়।

গৌরনদী পৌর এলাকার কাছেমাবাদ ব্লকের সফল চাষী গোলাম হেলাল মিয়া জানান, এবারই তিনি প্রথম গুটি ইউরিয়া সার প্রয়োগের মাধ্যমে সুগন্ধি লাল তীর ধানের চাষ করে প্রতি শতকে দেড় মনের মতো ফলন পেয়েছেন। তিনি আরো জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতে তিনি উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিরাজের পরামর্শে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগসহ সুগন্ধি লাল তীর ধান চাষ করেছেন। স্থানীয় মাহিলাড়া বাজার থেকে তিনি প্রতিকেজি ধান ২৬০ টাকা দরে দুইকেজি ধানের চারা ৩৬ শতক জমিতে রোপন করেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি এ ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। বিশ্ব বাজারে সারের দাম বাড়ছে। অথচ বাংলাদেশের কৃষকদের কথা চিন্তা করে বতর্মান সরকার তৃতীয় দফায় সারের দাম কমিয়েছে। এতো অল্প দামে বিশ্বে আর কোথাও সার পাওয়া যায়না। সরকারের এতো ঘাটতি দেয়া শুধু কৃষকদের জন্য। সেই কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দিলেই বরিশালকে আবারো প্রধান খাদ্য শষ্য ভান্ডার হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, গত দু’বছর পূর্বে লাল তীর ধানের উদ্ভাবন হয়েছে। এ ধানের ফলন হেক্টর প্রতি সাড়ে ৬ থেকে ৭ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে তা অনেকগুন বেড়ে গেছে। সুগন্ধি এ ধানের বাম্পার ফলন দেখে গত বছরের তুলনায় এবার অধিকাংশ কৃষকেরাই এ ধানের চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার চন্দ্রহার, সাহজিরা, সাকাকোঠী, আগৈলঝাড়ার বারপাইকা, মোল্লাপাড়া, ছয়গ্রাম, বাগধা, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ, বানারীপাড়া, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার অসংখ্য ইরি-বোরো ব্লকের চাষীরা এবার লাল তীর ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন।