বরিশালে শ্রমিক সংকট : ফসল ঘরে তুলতে পারছেনা কৃষকেরা

গৌরনদী সংবাদদাতা ॥ গত পাঁচদিন ধরে বরিশালে কাল বৈশাখী ঝড়, বৃষ্টি ও তীব্র শ্রমিক সংকটের কারনে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ক্ষেতের পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকেরা। ফলে অধিকাংশ জমিতে ঝড়ো বাতাসে ইরি-বোরো ধান জমিতে নুয়ে পড়ায় তার ওপর বৃষ্টির পানি জমে এখন বিনষ্টের উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম দিকে ধানের বাজার নিন্মমুখী ও গত কয়েকদিনের কাল বৈশাখী ঝড়ের কারনে অধিকাংশ এলাকায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। বিগত বছরে খুলনা ও বাগেরহাট এলাকা থেকে পর্যাপ্ত শ্রমিক বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় ধান কাটতে আসলেও চলতি বছর ধানের বাজারে দাম কম হওয়ায় মৌসুমের শুরুতে পর্যাপ্ত শ্রমিকেরা ধান কাটতে আসেনি। ইতোমধ্যে অনেকস্থানে শ্রমিকেরা ধান কাটতে আসলেও জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় তারা গৃহস্ত মালিকদের না জানিয়েই গন্তব্যে চলে গেছে। ফলে বিভিন্ন এনজিও এবং মহাজনদের কাছ থেকে চড়াসুদে টাকা এনে বেশি দাম দিয়ে সার-কীটনাশক কিনে কৃষকেরা বাম্পার ফলন পেলেও ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না। এ কারনেই ক্ষেতের ধান ক্ষেতেই বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরজমিনে আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর বড়মাগরা, জোবারপাড়, বাশাইল, ভালুকশী, চৌদ্দমেধা, বারপাইকা, মোল্লাপাড়া, কাঠিরা, শিহিপাশাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে কৃষকদের এ অবর্ণনীয় দুর্দশার চিত্র দেখা গেছে। এরমধ্যে যারা ধান কেটে বাড়িতে তুলেছে বৃষ্টির কারণে মারাই করতে না পারায় তারাও চরম ভোগান্তিতে পরেছে।

আগৈলঝাড়ার উত্তর বড়মাগরা গ্রামের কৃষক অজিত জয়ধর জানান, গত ১০দিন পূর্বেই ক্ষেতের ধান পেকে গেছে। এতোদিনেই কোন ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় তিনি ও তার  স্ত্রী শিবানী রানী দু’জনেই ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পশ্চিম মোল্লাপাড়া গ্রামের ননী বিশ্বাস বলেন, শ্রমিকদের জামাই আদরে তিন বেলা খাবারসহ ৫ ভাগ ধান দিয়েও তাদের পাওয়া যাচ্ছেনা। যারা এসেছিল তারাও পালিয়ে গেছে।

গৌরনদীর গেরাকুল গ্রামের চাষী হেলাল মিয়া, হানিফ বেপারীসহ অনেকেই জানান, ঝড়ের কারনে তাদের জমির পাকা ধান ক্ষেতে লুটিয়ে পরেছে। শ্রমিক সংকটে ক্ষেতে বসেই ধান বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শ্রমিক সংকটে অনেকেই আবার অল্পদামে ক্ষেতের ধান ক্ষেতেই বিক্রি করে দিচ্ছেন।