ওসি রতন কৃষ্ণ নাথের দ্রুত অপসারন দাবী – দাউদকান্দিতে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি – হত্যা ছিনতাই ডাকাতি মাদক ব্যবসা বেড়েই চলছে

মাহ্ফুজ ইসলাম শিপ্লু, দাউদকান্দি ॥ কুমিল্লার দাউদকান্দি মডেল থানার আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। বর্তমান ওসি যোগদানের ৫ মাসের মধ্যে ৭টি খুন, ডাকাতি, অপহরন, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও চুরি দিন দিন বেড়েই চলছে।

বর্তমান দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন কৃষ্ণ নাথ ২০১১ইং সালের নভেম্বর মাসের ২ তারিখে যোগদান করার পরপরই ৪ নভেম্বর উপজেলার কালাসোনা গ্রামের মোল্লা বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়।

৭ নভেম্বর গোয়ালী ও তিনপাড়া দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষে ব্যাপক লুটপাটসহ ১০ জন আহত হয়। ২২ নভেম্বর খুন হয় দাউদকান্দি পূজা উদযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল চন্দ্র সরকার (মামলা নং-২১)।

৩০ নভেম্বর থানার কয়েক’শ গজ দূরে খুন হয় আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কমিশনার মিলন খন্দকার (মামলা নং-০১)। মিলনের খুনের ঘটনায় ১ ডিসেম্বর ওসি রতন কৃষ্ণ নাথের অপসারণের দাবিতে হাজার হাজার পৌরবাসী বিক্ষোভ মিছিল সহ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।

৫ ডিসেম্বর খুন হয় নশিপুর গ্রামের মোঃ মামুন (মামলা নং-০৩)। একই দিনে পদুয়া ইউনিয়নের শরীরায়েচর গ্রামে থেকে অজ্ঞাত মহিলার লাশ পাওয়া যায়।

৯ ডিসেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দিতে এশিয়া বাসে ডাকাতি, ডাকাতদের আঘাতে গাড়ির চালক অলি আহমেদ সহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয় (মামলা নং- ১১)।

২৫ ডিসেম্বর দাউদকান্দি পৌর সদরে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে ঘরের প্রবেশ করে কেয়ার টেকারের মেয়ে রীনা আক্তার (২২) কে পুড়িয়ে হত্যা করে (মামলা নং-২৪)।

২৮ ডিসেম্বর জিংলাতলী থেকে পাওয়া যায় মোঃ বশির নামের একজনের লাশ।

১৮ জানুয়ারী ২০১২ তারিখে সিএনজি ছিনতাই হয় (মামলা নং-২৬), ৪ ফেব্রুয়ারী বিটেশ্বরে গাড়িতে ছিনতাই (মামলা নং-০৮)।

১৭ ফেব্রুয়ারী ইলিয়টগঞ্জের পুটিয়ায় ছিনতাইকারীদের হাতে ব্যবসায়ী বিপদ খুন হয়।

১৭ মার্চ গৌরীপুর বাজারে সোহাগ শিল্পালয় থেকে দিনদুপুরে ৩৯ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই। ২ এপ্রিল হাসানপুর কলেজের সামনে থেকে মম খান নামের এক ছাত্রীকে অপহরন।

৪ এপ্রিল মম খানের অপহরনকারীদের পুলিশ ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় ওসির অপসারনে দাবিতে থানা ঘেরাও। একই দিনে গৌরীপুর বাজারে প্রকাশ্যে দুই দলের গুলাগুলি।

১৭ এপ্রিল হাটখোলায় ডাকাতিকালে গনপিটুনিতে ১ ডাকাত মারা যায়। একই তারিখে গৌরীপুর হাড়িয়ালায় মুন্সীবাড়ীতে ডাকাতদের আঘাতে ৫ জন আহত হয়।

৩ মে গৌরীপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে দিনদুপুরে আড়াই লাখ টাকা ছিনতাই।

এছাড়াও দাউদকান্দি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে মাদকের ব্যবসা দিন দিন বেড়েই চলছে। তিনি থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক জনকে থানায় নিয়ে আসতেন। দেন দরবার করে বিভিন্ন অংকের টাকা উৎকোচ নিয়ে ছেড়ে দেয়া হত। যারা টাকা দিতে অপারগ হতেন তাদের পেনডিং মামলার আসামী হিসেবে চালান দেয়া হত। ওসির বিরুদ্ধে সিকিউরিটি সেল সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং হাজরও জনতার দাবী আইন-শৃঙ্খলার মারাত্বক অবনতি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওসি রতন কৃষ্ণ নাথের দ্রুত অপসারন করা না হলে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ নিবে বলে এলাকাবাসীরা জানান।