আগৈলঝাড়ায় স্বামীর পরিবার কর্র্তৃক গৃহবধুকে মেরে গলায় ফাস দিয়ে হত্যার চেষ্টা

দেলোয়ার সেরনিয়াবাত ॥ আগৈলঝাড়ায় স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে স্বামীর বাড়িতে ওঠায় স্বামীর পরিবারের লোকজন কর্তৃক গৃহবধূকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ব্রীজের সাথে ঝুলিয়ে হত্যার চেষ্টা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ৩ দিন পর জ্ঞান ফিরেছে ওই গৃহবধূর। এব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

এজাহার ও হাসপাতালে নির্যাতিত গৃহবধু জানায়, উপজেলার লখারমাটিয়া গ্রামের আ. বারেক মোল্লা ওরফে বদিয়ার মোল্লার ছেলে বাপ্পী মোল্লা (২৮)র সাথে পাশ্ববর্তী বাড়ির সিরাজুল ঘরামীর মেয়ে ইতি খানম (২০)-র সাথে গত ২০০৭ সাল থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের বন্ধনকে স্থায়ী করতে গত ১বছর পূর্বে বাপ্পি ইতিকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করে। গত ৪ মে শুক্রবার দুপুরে বাপ্পী তার স্ত্রী ইতিকে নিজ বাড়িতে যাবার নির্দেশ দেয়। স্বামীর নির্দেশ পেয়ে ইতি ওই বাড়িতে গেলে বাপ্পীর বাবা বারেক মোল্লা, বড় ভাই উপজেলা যুবদল নেতা টিটন মোল্লা, জেবা বেগম, রিয়াজসহ  ৪-৫জন মিলে বাপ্পীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাৎক্ষণিক তাড়িয়ে দিয়ে বাপ্পীর স্ত্রী ইতিকে বেধড়ক মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলে। অবস্থা বেগতিক দেখে একপর্যায়ে তারা ইতির গলায় থাকা ওড়না দিয়েই ইতিকে গলায় ফাস লাগিয়ে বাড়ির পাশ্ববর্তি ব্রীজের সাথে ঝুলিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় হাজেরা বেগম, মান্নান ভূইয়া, রিপন মৃধা, যুবদল নেতা মোহম্মদ আলী খোন্দকারসহ স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মূমূর্ষ অবস্থায় ইতিকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ৩ দিন অজ্ঞান থাকার পর গত রোববার রাতে হাসপাতালে ইতির জ্ঞান ফেরে। গুরুতর অসুস্থ ইতি সাংবাদিকদের জানায়, বাপ্পীর সাথে তার ৫বছর প্রেমের সম্পর্কর পর গত বছর বাপ্পী আমাকে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করে। বাপ্পীর চাচা ইঞ্জিনিয়ার আ. সোবহান গত জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল-১ আসন থেকে বিএনপির হয়ে চার দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। হামলাকারী টিটন উপজেলা যুবদল নেতা ও সোবহানের ভাতিজা। তাই সোবহানের ভাতিজা বাপ্পী ও তার পরিবার অর্থবিত্ত ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তারা আমাদের এ বিয়েতে অসন্মতি জানিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইতি তার স্বামী বাপ্পীর কোন খোজ পায়নি বলে জানায়। এঘটনায় ইতির বাবা সিরাজুল হক ঘরামী বাদী হয়ে গতকাল সোমবার ৭ মে আগৈলঝাড়া থানায় ৪ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও খুন করার উদ্দেশ্যে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-২(৭-৫-১২)। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার নন্দী জানান, মামলার পর হাসপাতালে নির্যাতিতর সাথে তিনি কথা বলেছেন, আসামীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে জোর চেষ্টা চলছে।