দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে তীব্র বিদ্যুৎ সংকট প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ট কল-কারখানার উৎপাদন ব্যহৃত

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালে চাহিদার এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত এক সপ্তাহ যাবত প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তার ওপরে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই অন্ধকার রাজত্ব গেড়ে বসছে নগরজুড়ে। এলাকা ভিত্তিক ভাগ করে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং দিয়েও সর্বত্র বিদুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই গরম বাড়ার সাথে সাথে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

বিদুৎ বিভাগ জানিয়েছেন, এখানে বিদুৎ-এর চাহিদা এখন ৮৫ থেকে ১’শ মেগাওয়াট। মঙ্গলবার রাতে সর্বোচ্চ ৪২ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে। রাত ১০টার পরে সরবরাহ করা হয়েছে ৩৪ মেগাওয়াট। গতকাল বুধবার সারাদিনে সর্বোচ্চ সরবরাহ ছিলো ৩০ মেগাওয়াট। চাহিদার এক তৃতীয়াংশের বেশি বিদ্যুত না পাওয়ায় শুধু জনজীবনে দুর্ভোগ নয় কলকারখানায় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে চরম ভাবে। জাতীয় গ্রীড লাইনে বিদ্যুৎবণ্টন নিয়ে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিদ্যুতের মোট উৎপাদনের নায্য হিস্যা অনুযায়ী পশ্চিম জোনে বরাবরই সরবরাহ কম করা হয়। পশ্চিম জোনে কেন্দ্রীয় লোড ডেসপাস সেন্টার (সিএলডিসি) থেকে নানা মারপ্যাচে বিদ্যুৎ কম দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। খুলনায় রয়েছে এলডিসি’র আরেকটি অফিস। সেখান থেকে বরিশাল অঞ্চলে সরবরাহ কমিয়ে কেন্দ্রের মতই নিজের এলাকায় বেশী বিদুৎ রাখার অভিযোগ এখানকার বিদুৎ বিভাগে কর্মরত ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন ও ওজোপাডিকো’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বিদুৎ বিতরন ও সরবরাহে সবচেয়ে বঞ্চিত হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলা। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী অপারেশনসহ নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মেশিন সচল রাখতে বিদ্যুৎ সংকটে হিমমিশ খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

অপসোনিন, অমৃত ফুড প্রোডাক্ট্র, খান সন্স, মেডিমেড, রেফকো ল্যাবঃ, ইন্দ্রোবাংলা, কেমিস্ট ল্যাবঃ সহ ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বিদুৎ সংকটে তাদের উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অপসোনিনের বিভিন্ন প্রকারের ঔষধ তৈরীর জন্য ২৪ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রয়োজন। বিদ্যুতের যাওয়া-আসার খেলার কারণে জরুরী ঔষধ তৈরীর জন্য তারা ব্যবহার করেন উন্নত মানের দামী জেনারেটর। এতে উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ফলে ঔষধের দাম বাড়িয়ে তা চাপানো হয় ভোক্তার ওপর। একই অবস্থা খানসন্স ও সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিল, এ্যাংকর সিমেন্ট লিমিটেডসহ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের। তারা বিদ্যুৎ সংকটের কারণে শ্রমিকদের বসিয়ে বেতন দিতে বাধ্য হচ্ছেন  বলে জানিয়েছেন।